শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: নানামুখী গুজব ছড়িয়ে পুঁজিবাজার অস্থিতিরতার নেপেথ্যে কারা এ প্রশ্ন এখন লাখ লাখ বিনিয়োগকারীদের মুখে মুখে। সরকারের নানা আন্তরিকতার ফলে বাজার স্থিতিশীল হচ্ছে না। বরং গত ১ মাসের মধ্যে ৭ কার্যদিবস সূচকের বড় দরপতন ঘটছে। ফলে বাজার নিয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়ছে বিনিয়োগকারীরা। ২০২১ সালের শুরু থেকে বাজার দীর্ঘদিন ধরে স্থিতিশীলতার দিকে হাটছে। তবে হঠাৎ করে নানা গুজব ছড়িয়ে বাজারকে অস্থিতিশীল করা হচ্ছে।

এর নেপথ্যে কারা, এদের খুঁজে বের করে শাস্তির দাবি জানিয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। গত ৭ কার্যদিবসের বাজার পরিস্থিতি ২০১০ সালের ধসের কথা বিনিয়োগকারীরা স্মরন করছে। এই চক্রটি পুঁজিবাজারে গুজব রটিয়ে ফায়দা লুটছে। এরা পুঁজিবাজারকে অস্থিতিশীল করে সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে চাচ্ছে। এ চক্রটি পুঁজিবাজারে খুব শক্তিশালী। এদের কারনে পুঁজিবাজার স্থিতিশীল হচ্ছে না। ফলে বর্তমান বাজার নিয়ে আতঙ্কের কিছু নেই বলে মনে করছেন বাজার বিশ্লেষকরা।

পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেছেন, তাঁর পদত্যাগের খবরটি সম্পূর্ণ গুজব ও ভিত্তিহীন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিএসইসি চেয়ারম্যান বিনেয়োগকারীদের আরও বেশি সাবধান থাকার অনুরোধ জানিয়েছে বলেছেন, পদত্যাগের খবরটি সম্পূণ গুজব। এর কোন ভিত্তি নেই।

তিনি বলেন, আমাদের ইনডেক্সকে প্রভাবিত করা, দাম কমিয়ে কেনার চেষ্টা করা এবং প্যানিক তৈরী করে সুবিধা নেওয়ার জন্য বেশ কিছু মহল বিভিন্ন সময়ে গুজব রটাচ্ছে। এ ব্যাপারে বিনেয়োগকারীদের সাবধান থাকা এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সোচ্চার থাকার অনুরোধ করছি।

দেশের শেয়ারবাজার যখন এক ক্রান্তিকাল পার করছিল, প্রতিদিন দরপতনের ধাক্বায় শেয়ারবাজারের টালমাটাল অবস্থা বিরাজ করছিল, সেই সময়ে নাজুক শেয়ারবাজারের হাল ধরেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চৌকষ শিক্ষক অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম। তাঁর সঙ্গে যুক্ত হন আরও তিন চৌকষ কমিশনার অধ্যাপক ড. শামসুদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান ও সাবেক সচিব আব্দুল হালিম। চৌকষ ব্যক্তিদের যোগ্য নেতৃত্বে রুগ্ন শেয়ারবাজার আবার জাগতে শুরু করে। তাঁদের নানামুখী সংস্কার কর্মকান্ডের বদৌলতে শেয়ারবাজার আবারও প্রাণ পেতে শুরু করে।

নতুন নতুন চমক আসতে থাকে দেশের শেয়ারবাজারে। নতুন কমিশনের কারিশম্যাটিক কর্মকান্ডে শেয়ারবাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরতে শুরু করে। ফলশ্রুতিতে শেয়ারবাজারে চাঙাভাব তৈরি হয়। শেয়ারবাজারের গতি ও চাঙ্গাভাব দেখে একটি চিহ্নিত গোষ্ঠি প্রথম থেকেই নানা নেতিবাচক প্রবণতায় উঠে-পড়ে লাগে। বিভিন্ন গুজব ও অপপ্রচার ছালিয়ে বাজারকে অস্থির করার চেষ্টা করছে তারা। এবার গুজব ও অপপ্রচারের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে শেয়ারবাজারের পালে হাওয়া লাগানো সফল ব্যক্তিত্ব বিএসইসির চেয়ারম্যানের পদত্যাগ।

এরফলে গত ১১ অক্টোবর থেকে চলতে থাকে শেয়ারবাজারে টানা পরপতন। ওইদিন লেনদেনের শুরুতে ডিএসইএক্সের অবস্থান করছিল ৭ হাজার ৩৬৭ দশমিক ৯৯ পয়েন্ট। মঙ্গলবার (১৯ অক্টোবর) তা কমে দাঁড়িয়েছে ৭ হাজার ২০ পয়েন্টে। সাত কার্যদিবসে সূচক কমেছে ৩৪৭ পয়েন্ট।

বিএসইসির পক্ষ থেকে বলা হয়, বিএসএসিরি চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম পদত্যাগ করার গুজব ছড়িয়েছে একটি চক্র। এর সাথে একটি প্রতিষ্ঠানও জড়িত। বিএসইসি তাদের শনাক্ত করেছে এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

এদিকে, মঙ্গলবার শেয়ারবাজারে স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে বৈঠকশেষে বিএসইসির কমিশনার অধ্যাপক ড. শেখ সামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, একটি মহল শেয়ারবাজারকে অস্থিতিশীল করার জন্য গুজব ছড়াচ্ছে। এই বিষয়টিও তদন্ত করা হচ্ছে। তিনি বলেন, বাজারে গুজব ছড়ানো হচ্ছে যে বিএসইসি চেয়ারম্যান পদত্যাগ করতে যাচ্ছেন। কিন্তু প্রকৃত পক্ষে এর কেনো ভিত্তি নেই।

বিএসইসির এই কমিশনার বলেন, শেয়ারবাজার নিয়ে ভয় পাওয়ার কিছু নেই, আতঙ্কিত হওয়ারও কিছু নেই। শেয়ারবাজারের জন্য কমিশনের চেয়ারম্যান ও আমরা কাজ করছি। কেউ বা কোনো গোষ্ঠী যদি পুঁজিবাজারে কারসাজি করতে চায়, বিনিয়োগকারীদের ক্ষতি করতে চায় আমরা বসে থাকবো না। আমরা এখন অনেক শক্তিশালী, এখন কারসাজি করলেই চিহ্নিত করতে পারি।

ড. শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, আমাদের চেয়ারম্যান যদি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর হন তাহলে তো সেটা শেয়ারবাজারের জন্য আরও ভালো খবর, আরও সৌভাগ্যের বিষয়। এটা তো লকোচুরির কিছু নয়। এটা নিয়ে গুজব ছড়ানোরও কিছু নেই। সুদ্র: দেশ প্রতিক্ষণ