শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত তিন কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করছে। তবে এর মধ্যে হাইডেলবার্গ সিমেন্ট লোকসানে। এছাড়া সিঙ্গার বিডির মুনাফায় ধস নেমেছে।তবে কন্টিনেন্টাল ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডের মুনাফা বেড়েছে। নিন্মে কোম্পানিগুলোর বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হলো:

কন্টিনেন্টাল ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বীমা খাতের কোম্পানি কন্টিনেন্টাল ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড তৃতীয় প্রান্তিকের (জুলাই’২১-সেপ্টেম্বর’২১) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। কোম্পানি সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে। জানা যায়, তৃতীয় প্রান্তিকে (জুলাই’২১-সেপ্টেম্বর’২১) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় বা ইপিএস হয়েছে ৫৩ পয়সা, যা গত বছর একই সময়ে ছিল ৩৩ পয়সা। তিন প্রান্তিক মিলিয়ে তথা ৯ মাসে (জানূয়ারি’২১-সেপ্টেম্বর’২১) কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ১.৭০ টাকা, যা গত বছরের এই সময়ে ১ টাকা ৩২ পয়সা ছিল।

গত ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২১ তারিখে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য হয়েছে ২০.৫১ টাকা। গত বছরের এই সময়ে ১৯.৭০ টাকা ছিল। শেয়ার প্রতি নেট অপারেটিং ক্ল্যাশ ফ্লো (এনওসিএফপিএস) হয়েছে ০.৪৬ টাকা। গত বছরের এই সময়ে ০.৪৮ টাকা ছিল।

সিঙ্গার বাংলাদেশ লিমিটেড: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি সিঙ্গার বাংলাদেশ লিমিটেড ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২১ সমাপ্ত তৃতীয় প্রান্তিকের (জুলাই-সেপ্টেম্বর’২১) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। কোম্পানি সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে। তৃতীয় প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ১ টাকা ২৮ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে ইপিএস হয়েছিল ৪ টাকা ২৮ পয়সা।চলতি অর্থবছরের তিন প্রান্তিকে (জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর’২১) কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ৫ টাকা ৯৭ পয়সা। আগের বছরের এই সময়ে ছিল ৬ টাকা ২৯ পয়সা।

৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২১ তারিখে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য হয়েছে ৩৫ টাকা। আগের বছরের এই সময়ে ছিল ৩৪ টাকা ৬৬ পয়সা।আলোচ্য সময়ে শেয়ার প্রতি নেট অপারেটিং ক্ল্যাশ ফ্লো (এনওসিএফপিএস) হয়েছে ৩৪ টাকা ১৩ পয়সা। আগের বছরের এই সময়ে ছিল ১ টাকা ৩০ পয়সা।

হাইডেলবার্গ সিমেন্ট: টানা দুই বছর লোকসান দেয়ার পর বহুজাতিক সিমেন্ট কোম্পানি হাইডেলবার্গ চলতি বছরের প্রথম দুই প্রান্তিকে বেশ ভালো মুনাফা করলেও তৃতীয় প্রান্তিকে আবার লোকসানে পড়েছে। গত জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিন মাসে কোম্পানিটি শেয়ার প্রতি ১ টাকা ৯১ পয়সা লোকসান দিয়েছে। তবে এই লোকসান দেয়ার পরও তিন প্রান্তিক শেষে জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মুনাফাতেই আছে কোম্পানিটি।

এর আগের দুই প্রান্তিকে জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত কোম্পানিটি শেয়ার প্রতি ১১ টাকা ৭৯ পয়সা মুনাফায় ছিল কোম্পানি। ফলে গত তিন মাসে লোকসান দেয়ার পরও তাদের শেয়ার প্রতি আয় আছে ৯ টাকা ৮৮ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি লোকসান ছিল ৩ টাকা ২ পয়সা।

বরাবর ভালো আয়ের জন্য প্রসিদ্ধ হাইডেলবার্গ সিমেন্ট গত দুটি বছর কঠিন সময় পার করছে। ২০১৯ সালে শেয়ার প্রতি শেয়ার প্রতি ৩ টাকা ৩০ পয়সা লোকসান দেয়ার পর ওই বছর কোনো লভ্যাংশ দেয়নি কোম্পানিটি।

পরের বছর লোকসান কিছুটা কমিয়ে আনার পর রিজার্ভ থেকে ২০ শতাংশ, অর্থাৎ শেয়ার প্রতি ২ টাকা লভ্যাংশ দেয় তারা। ওই বছর শেয়ার প্রতি লোকসান ছিল ১ টাকা ৪৩ পয়সা।

তবে চলতি বছর থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর আভাস দেয় কোম্পানিটি। জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত প্রথম প্রান্তিকে ৮ টাকা ২৩ পয়সা মুনাফার তথ্য দেয়ার পর শেয়ার মূল্যও বেড়ে দ্বিগুণ হয়ে যায়। দ্বিতীয় প্রান্তিকে এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত মুনাফা কিছুটা কমে হয় ৩ টাকা ৫৬ পয়সা।

করোনার বিধিনিষেধ সীমিত হয়ে যাওয়ার পর অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের গতি বাড়া, নির্মাণ কাজ পুরোদমে চলোর পর তৃতীয় প্রান্তিকে আয় আরও বাড়বে বলে আশা করছিলেন বিনিয়োগকারীরা। এই ভরসাতেই শেয়ারদর টানা বাড়ছিল।

লোকসানে পড়ার পর গত বছর শেয়ার মূল্য ১৩৭ টাকায় নেমে গেলেও সম্প্রতি তা ৩৭৯ টাকা পর্যন্ত উঠে। তবে গত কয়েক দিনে সেখান থেকে কিছুটা কমে দাঁড়িয়েছে ৩৬১ টাকা ৯০ পয়সা। প্রান্তিক প্রকাশের দিনও শেয়ার মূল্য বেড়েছে ৬ টাকা ২০ পয়সা।

৫৬ কোটি ৫০ লাখ ৪০ হাজার টাকা পরিশোধিত মূলধনের কোম্পানিটির ৬০.৬৭ শতাংশ শেয়ার উদ্যোক্তা-পরিচালকদের কাছে আছে। ২৭.৯৪ শতাংশ শেয়ার কিনেছে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা। বিদেশি বিনিয়োগকারীদের হাতে আছে ০.৫২ শতাংশ আর সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে আছে বাকি ১০.৮৭ শতাংশ শেয়ার।