মুহাম্মদ আবদুর রাজ্জাক, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বীমা খাতের কোম্পানি বিজিআইসি লিমিটেড প্রহসনের বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) করেছে। এমনটাই অভিযোগ ওঠে কোম্পানির বিরুদ্ধে। গত বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর লেডিস ক্লাবে সভাটি অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ জেনারেল ইন্সুরেন্স কোম্পানির (বিজিআইসি) এজিএমে গিয়ে দেখা গেলো ভয়ানক সব দৃশ্য।

বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর লেডিস ক্লাবে সভাটি শুরু হবার কিছু পরই শেয়ারহোল্ডারদের দুটি গ্রুপ মঞ্চে উঠার জন্য রীতিমতো প্রতিযোগিতায় নেমে পড়ে। আর এনিয়ে তারা এক পক্ষ অপর পক্ষকে ঘায়েল করার জন্য অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে।

অদৃশ্য এ শক্তির হাতে কখনও বিনিয়োগকারী আর কখনও জিম্মি কেম্পানি কর্তৃপক্ষ। বহুল আলোচিত এ চক্রের কারণে তালিকাভুক্ত কোনো প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম) কথা বলার অধিকার এবং বছর শেষে ন্যায্য ডিভিডেন্ড বঞ্চিত হন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা।

কিন্তু কোনোভাবেই এ চক্রকে চিহ্নিত করা সম্ভব হচ্ছে না। বরং আলোচনায় এলেও রহস্যজনক কারণে সবসময়ই ধরাছোঁয়ার বাইরেই থাকছে এ চক্রের নেপথ্যের নায়করা। এজিএম পার্টির কর্মকাণ্ড আর বিনিয়োগকারীদের ক্ষতি নিয়ে গণমাধ্যমে বিভিন্ন সময় সংবাদ প্রকাশের পর নানাভাবে চাপ প্রয়োগ করার চেষ্টা করা হয় বলেও তথ্য মিলেছে।

দীর্ঘদিন ধরে এজিএম পার্টির কাছে জিম্মি সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এজিএম পার্টির তৎপরতার কারণে ক্ষোভ দানা বাঁধছে। বাজারের স্বচ্ছতা, বিনিয়োগকারীদের ন্যায্য অধিকার ও কোম্পানিগুলোর স্বার্থেই এ চক্রকে চিহ্নিত করার পক্ষে মত দিয়েছেন পুঁজিবাজার বিশ্লেষকরা। কিন্তু এজিএম পার্টির তৎপরতার বিষয়ে দায়িত্বশীলরা অবগত থাকলেও রহস্যজনক কারণে এ অপশক্তিকে দমন করা যাচ্ছে না। এখনও এজিএম পার্টিই সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করছে।

এ সময় তারা বিজিআইসির কোম্পানি সচিব সাইফুদ্দিন আহমদের কাছ থেকে মাইক্রোফোন ছিনিয়ে নিয়ে এমডির গুণগান শুরু করে। অপরপক্ষ বক্তব্য দিতে না পেরে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে করতে জোরপূর্বক মঞ্চে উঠতে চাইলে মঞ্চে থাকা প্রথমপক্ষ তাদেরকে জানে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে। তবে এসময় কয়েকজনকে কিলঘুষি মারতে মারতে গেটের বাইরে নিয়ে যেতে দেখা যায়। অবশ্য সভা শেষে এর জন্য প্রথমপক্ষ কোম্পানির এমডির কাছ থেকে চার লাখ টাকা চায়।

দ্বিতীয়পক্ষকে শায়েস্তা করার পর সভার কার্যক্রম আবার শুরু হয়। নুরুল আনোয়ার নামে এমডির পছন্দের একজন শেয়ারহোল্ডার এবং সাংবাদিক মনিরুজ্জান বক্তব্য রাখেন। এ ছাড়া চেয়ারম্যন তনয় ফয়সাল সামাদ বিজিআইসির প্রতিষ্ঠাতা এম এ সামাদের স্মৃতিচারণ করে রসালো বক্তব্য দিয়ে শেয়ারহোল্ডারদের মাতিয়ে রাখেন।

বিজিআইসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহমেদ সাইফুদ্দিন চৌধুরী তার বক্তব্যে বলেন, প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিজিআইসির পথচলা অগ্রগতির। নানা সমস্যার কারণে আমরা কাঙ্খিত ডিভিডেন্ট দিতে পারছি না। তিনি বলেন, আইডিআরএ-এর সার্কুলার অনুযায়ী আমরা কমিশন দিতে না পারলেও ডিভিডেন্ট দেবো। সভায় শেয়ারহোল্ডারদের মধ্য থেকে ডিবিএ সভাপতি শাকিল রিজভীকে পরিচালক হিসেবে ঘোষণা দেয়া হয়।

বিজিআইসির চেয়ারম্যান তওহিদ সামাদ বলেন, ডিভিডেন্ড ব্যবসার অংশ। বিজিআইসির এজিএমের কালচার ডিপারেন্ড। গন্ডগোলের নয় শেয়ারহোল্ডাররা গাইড করবেন,বলবেন। তিনি বলেন, ইন্সুরেন্সের জন্য এখন খারাপ সময়। ইন্সুরেন্সে অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটছে।