শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: দরপতনের মধ্যদিয়ে নতুন অর্থবছরের দ্বিতীয় সপ্তাহ পার করল দেশের পুঁজিবাজার। আলোচিত সপ্তাহে (৭ জুলাই থেকে ১১ জুলাই) টানা পাঁচ কার্যদিবসে সূচক পতন হয়েছে। ফলে দুই পুঁজিবাজারে সূচক ও বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে। আর তাতে বিনিয়োগকারীদের পুঁজি অর্থাৎ বাজার মূলধন কমেছে প্রায় সাড়ে ২১ হাজার কোটি টাকা।

এর মধ্যে প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বিনিয়োগকারীদের পুঁজি কমেছে ১০ হাজার ৯৪৯ কোটি ৯০ লাখ ৪ হাজার ৫৩২ টাকা। অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) বিনিয়োগকারীদের মূলধন কমেছে ১০ হাজার ৪৯২ কোটি ৫২ লাখ টাকা।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পুঁজিবাজার ভালো হবে, বিনিয়োগকারীদের এই প্রত্যাশার ছিটেফোঁটাও পূরণ হচ্ছে না। বরং ২০১৯-২০ অর্থবছরে বাজেট পাসের পর থেকে আবারও নগদ লভ্যাংশ দেওয়ার পরিবর্তে কোম্পানিগুলো আগামীতে ‘নো ডিভিডেন্ট’ ঘোষণা করবে—এমন গুজব ও ব্যাংক এবং আর্থিক খাতের দুরবস্থার খবরে হতাশা বিরাজ করছে পুঁজিবাজারে।

পাশাপাশি সুশাসনের অভাবে বাজারে পুঁজিবাজারে দরপতন অব্যাহত রয়েছে বলেও অভিযোগ বিনিয়োগকারীদের। এছাড়াও গ্রামীণফোনের দেনা-পাওনা নিয়ে বিটিআরসি’র সঙ্গে দ্বন্দ্ব এবং পিপলস লিজিং কোম্পানির অবসায়ন ঘোষণায় নতুন করে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থা ও তারল্য সংকট তৈরি হয়েছে। পুঁজি ফিরে পাওয়ার পরিবর্তে নতুন করে পৌনে ২৮ লাখ বিনিয়োগকারীদের সাড়ে ২১ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।

ফলে নতুন করে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে। নতুন করে সৃষ্ট দরপতনের ফলে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের হাহাকার বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।

বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের সপ্তাহের চেয়ে ১৫৮ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ২২২পয়েন্ট দাঁড়িয়েছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএস-৩০ সূচক ৫২ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৮৫৭ পয়েন্ট এবং ডিএসইএস সূচক কমে ৩৮ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ১৯৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ৬০ কোম্পানির শেয়ারের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে, কমেছে ২৮১টি আর অপরিবর্তিত রয়েছে ১৩টি কোম্পানির শেয়ারের দাম। এর আগের সপ্তাহে লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দাম বেড়েছে ১৬৫টির, কমেছে ১৬৬টির আর অপরিবর্তিত রয়েছে ২৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম।

সূচক লেনদেনে ও বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমলেও আগের সপ্তাহের চেয়ে লেনদেন ১৬৫ কোটি টাকা বেড়েছে। গত সপ্তাহে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ১১২ কোটি ৮৭ লাখ ৫৪ হাজার ৩৮ টাকা। এর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ৯৪৭ কোটি ৪৭ লাখ ১৯ হাজার ১৩৩ টাকা।

সিএসইতে লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৫৭টির, কমেছে ২৪৬টির, আর অপরিবর্তিত রয়েছে ১০ কোম্পানির শেয়ারের দাম। তাতে সিএসইর প্রধান সূচক ৪৯৭ পয়েন্ট কমে ১৫ হাজার ৯৭২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। গত সপ্তাহে লেনদেন হয়েছে ৮৪ কোটি ২৭ লাখ ১৪ হাজার ১৯৫ টাকা। এর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ২৪৩ কোটি ৬৮ লাখ ৮৯ হাজার ৮৭৫ টাকা।