শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা:  পুঁজিবাজারে নানা পদক্ষেপ নিয়েও থামানো যাচ্ছে না ব্রোকারেজ হাউসগুলোর কারসাজি। তেমনি একের পর এক কারসাজির অভিযোগ উঠলে কমার্স ব্যাংক সিকিউরিটিজ কর্তৃপক্ষ ধরাকে সরা জ্ঞান ভাবে চলছেন।

একই কোড ব্যবহার করে লেনদেন, অ্যাগ্রেসিভ সেল করে মুনাফা হাতিয়ে নিচ্ছে ব্রোকারেজ হাউজটি। সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (এসইসি) ও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) মনিটরিং সেল করে থামাতে পারছে না হাউসটির কারসাজি।

অভিযোগ রয়েছে, মনিটরিং সেলের সদস্যদের যোগসাজশে কারসাজি হচ্ছে। বাজার সংশ্লিষ্টরা বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরে না আসার পেছনে ব্রোকারেজ হাউসের কারসাজিকে দায়ী করছেন। এছাড়া কমার্স ব্যাংক সিকিউরিটিজ হাউজের এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে রয়েছে অসংখ্য অভিযোগ।

তার নিজস্ব একটি সিন্ডিকেট চক্র বিভিন্ন গুজব ছড়িয়ে বিনিয়োগকারীদের বোকা বানিয়ে শতশত কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। একের পর এক কারসাজির অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। সম্প্রতি পেনিনসুলা নিয়ে নানা গুজব ছড়িয়ে কর্মাস ব্যাংক সিকিউরিটিজ থেকে। আর এ নেপেথ্যে ছিল এক এভিপি।

হঠাৎ করে গতকাল ন্যাশনাল লাইফের বিক্রেতা উদাও। কারন কর্মাস ব্যাংক সিকিউরিটিজ হাউসের এগ্রোসিভ ক্রয়ের কারণে বিক্রেতা শূন্য হয়ে যায়। এমন কি কেনার সময় বিক্রেতা শূন্য করে কার স্বার্থ হাছিল করছে কর্মাস ব্যাংক সিকিউরিটিজ – এ প্রশ্ন এখন বিনিয়োগকারীদের মুখে মুখে।

ঠিক একই ভাবে আরএসএম স্টিল, কেডিএস, কুইন সাউথ টেক্সটাইল এবং পেনিনসুলা সহ আরো কয়েকটি কোম্পানি শেয়ার কিনার সময এরকম বাড়িয়ে ছিল কর্মাস ব্যাংক সিকিউরিটিজ। এই শেয়ার গুলোতে বিনিয়োগ করে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীররা মুনাফা কি পেয়েছিল? তেমনি লোকসান গুণতে হয়েছিল বিনিয়োগকারীদেরকে।

অভিযোগ রয়েছে, কোন একটি গ্রুপকে বের করে দেওয়ার জন্য যোগসাজসে কর্মাস ব্যাংক সিকিউরিটিজ এভাবে শেয়ারের দাম বাড়িয়ে হঠাৎ করে বেরিয়ে যায়। আর অভিযোগ রয়েছে এ পেছনে মুল ভুমিকা রাখছেন কমার্স ব্যাংক সিকিউরিটিজের শীর্ষ এক কর্মকর্তা। তিনি প্রতিদিনই নিত্য নতুন একটি কোম্পানির শেয়ার বিক্রেতা শুন্য করে ফেলেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রে ম্যাচিউট দিনে বিক্রি করে দেন। তবে তিনি শেয়ার কেনার পরের দিন গুজব ছড়িয়ে বিনিয়োগকারীদেরকে কিনতে বলেন।

বাজার সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, ন্যাশনাল লাইফ ইন্সুরেন্স নিয়ে নতুন করে কারসাজিতে জড়িয়ে পড়ছে চক্রটি। এদের বিরুদ্ধে একের পর এক কারসাজির অভিযোগ উঠছে। এ ব্যাপারে নিয়ন্ত্রণ সংস্থা দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে বিনিয়োগকারীরা রাস্তায় নামতে বাধ্য হবে। কারণ একের পর এক শেয়ার কিনে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের নি:স্ব করছে এই কারসাজি চক্র।

বাজার বিশ্লেষকরা বলেন, ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্সসহ যেসব কোম্পানির শেয়ার কারসাজি হচ্ছে বলে মনে হয়, সেগুলোকে তদন্তের মাধ্যমে আইনিভাবে ব্যবস্থা নেওয়া উচিৎ। পাশাপাশি এর সাথে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া উচিত।

ডিএসইর এক পরিচালক বলেন, এসব কোম্পানির অস্বাভাবিক দাম বাড়ানোর পেছনে কে বা কারা জড়িত, সার্ভেইলেন্স সফটওয়ার দেখে তাদের চিহ্নিত করে কমিশনে প্রতিবেদনও জমা দেওয়া হয়েছে।

বাজার বিশ্লেষনে দেখা যায়, গত ২৭ আগষ্ঠ বীমা খাতের ন্যাশনাল লাইফ ইন্সুরেন্স লিমিটেডের শেয়ারের দাম ছিলো ১৩৮.৭০ টাকা। এরপর থেকে কোনো কারণ ছাড়াই কেবল কারসাজি চক্রের দাপটে শেয়ারের দাম গতকাল এ শেয়ারের দর বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮৮ টাকা। অথাৎ মাত্র ১০ কার্যদিবসে শেয়ারের দাম বেড়েছে প্রায় ৫০ টাকা।

এ বিষয়ে ডিএসই সাবেক সভাপতি রকিবুর রহমান বলেন, কোনো ব্রোকারেজ হাউসের কারসাজি বা এগ্রেসিভ সেল গুরুতর অপরাধ। তবে ডিএসইর বিভিন্ন হাউসের কার্যক্রম দেখতে আলাদা মনিটরিং টিম গঠন করেছে। প্রতিদিনই মনিটরিং টিম হাউস পরিদর্শন করে। কোনো অনিয়ম দেখলে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এক্ষেত্রে কমার্স ব্যাংক সিকিউরিটিজ নাকি অন্য ব্রোকারেজ হাউজ তা দেখার বিষয় নয়।