dividendফয়সাল মেহেদী, শেয়ারবার্তা২৪ ডটকম, ঢাকা: দেশের পুঁজিবাজারের আসছে ডিসেম্বর ক্লোজিং হওয়া কোম্পানিগুলোর ডিভিডেন্ডের জোয়ার। ডিসেম্বর ক্লোজিংয়ের সিংহভাগ কোম্পানি মৌলভিত্তির হওয়া ডিভিডেন্ড ঘোষণার সময় যতই ঘনিয়ে আসছে কোম্পানিগুলোর প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ ততই বাড়ছে।

একই সঙ্গে বাড়ছে শেয়ার দর, যার প্রভাব পড়ছে বাজারের সূচক ও লেনদেনে। ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত হিসাব বছরের জন্য মুনাফার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ডিভিডেন্ড ঘোষণা করবে এমন প্রত্যাশা সংশ্লিষ্টদের।

ডিসেম্বর ক্লোজিং তালিকায় পুঁজিবাজারের ব্যাংকিং, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বীমা থাতসহ বিভিন্ন খাতের ১২টি বহুজাতিক কোম্পানি রয়েছে। অর্থাৎ ডিসেম্বরে শেষ হয়েছে ১১২টি কোম্পানির হিসাব বছর। কোম্পানিগুলোর মধ্যে রয়েছে- ব্যাংকিং খাতের ৩০টি, আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের ২৩টি, বীমা খাতের ৪৭টি এবং ১২টি বহুজাতিক কোম্পানি। এর মধ্যে বেশি ভাগ কোম্পানিই বড় মূলধনের। ডিভিডেন্ড মৌসুমকে ঘিরে শেয়ারগুলোর চাহিদা কয়েকগুণ বেড়ে গেছে। দর বাড়ার পাশপাশি বাড়ছে লেনদেনও। এর প্রভাকে সূচক ক্রমইে ঊর্ধ্বগতী হচ্ছে।

সর্বশেষ প্রকাশিত তৃতীয় প্রান্তিকের (৯ মাসের) অনীরিক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা গেছে, সদ্য সমাপ্ত হিসাব বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে ব্যাংকিং খাতের ৩০ ব্যাংকের মধ্যে ২০টির শেয়ারপ্রতি আয় আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বেড়েছে।

অন্যদিকে আট ব্যাংকের শেয়ারপ্রতি আয় বা ইপিএস আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় কমেলেও লোকসান বেড়েছে একটি ব্যাংকের। এছাড়া তৃতীয় প্রান্তিক শেষে অপর ব্যাংকটি মুনাফা থেকে ব্যাপক লোকসানে নেমেছে।

এদিকে আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের ২৩টির মধ্যে অধিকাংশ কোম্পানিই আর্থিক দুরাবস্থায় রয়েছে। এ খাতের বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান আগের একই সময়ে মুনাফায় থাকলেও সদ্য সমাপ্ত হিসাব বছরের তৃতীয় প্রান্তিক শেষে নতুন করে লোকসানে পড়েছে। আবার একাদিক প্রতিষ্ঠানের শেয়ারপ্রতি লোকসান আগের বছরের একই সময়ের তুলায় বেড়েছে এবং কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারপ্রতি আয় বা ইপিএস  আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় কমেছে।

বীমা খাতের কোম্পানিগুলোর মধ্যে জীবন বীমাগুলো বাদে অর্থাৎ সাধারন বীমাগুলোর অধিকাংশরই শেয়ারপ্রতি আয় বা ইপিএস আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বেড়েছে। এ খাতের বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশা কোম্পানিগুলো এবার ডিভিডেন্ড ঘোষণার হার বাড়াবে।

এছাড়া ডিভিডেন্ড ঘোষণার অপেক্ষায় রয়েছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ১২ বহুজাতিক কোম্পানি। কোম্পানিগুলো হলো- সিঙ্গার বাংলাদেশ, রেকিট বেনকিজার, বিএটিবিসি, বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশ, লাফার্জ সুরমা সিমেন্ট, গ্রামীণফোন, গ্ল্যাক্সো স্মিথক্লাইন, লিন্ডে বিডি, বাটা সু, হাইডেলবার্গ সিমেন্ট ও আরএকে সিরামিক।

বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর ডিভিডেন্ড ঘোষণার হার বেশি হওয়ায় সারাবছরই শেয়ারগুলোর প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ থাকে। দেখা গেছে, সর্বশেষ প্রকাশিত তৃতীয় প্রান্তিক শেষে অধিকাংশ বহুজাতিক কোম্পানির শেয়ারপ্রতি আয় বা ইপিএস আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বেড়েছে। ফলে মুনাফার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে কোম্পানিগুলো ডিভিডেন্ড ঘোষণার হারও বাড়াবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

উল্লেখ্য, অর্থ আইন’ ২০১৫ অনুসারে ব্যাংক, বীমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান ব্যতীত সব কোম্পানির জন্য কর বছরের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে হিসাব বছর গণনা বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে তালিকাভুক্ত সব কোম্পানির হিসাব বছর শেষ হয় ৩০ জুন শেষ হলেও পুঁজিবাজারের ১৩ বহুজাতিক কোম্পানিকে ক্লোজিংয়ের বাধ্যবাধকতার অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।