share-bazarশেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: ইতিবাচক ধারায় ফিরেছে দেশের পুঁজিবাজার। ২০১৬ সালে দেশের পুঁজিবাজারে বৈদেশিক লেনদেনের ক্ষেত্রে অতীতের সব রেকর্ড ভঙ্গ করে নতুন মাইলফলক সৃষ্টি করেছে। চলতি বছরে ডিএসইতে বৈদেশিক লেনদেন ছাড়িয়েছে সাড়ে ৮ হাজার কোটি টাকা। নিট বিনিয়োগও ছাড়িয়েছে হাজার কোটি টাকা। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

তেমনি ২০১৭ সালে বাংলাদেশের পুঁজিবাজার হবে বিনিয়োগকারীদের কাছে স্মরনীয় বছর। বাজার নিয়ে সরকারসহ নীতি নির্ধারকদের আন্তরিকতায় সুচক পাঁচ হাজার অতিক্রম করেছে। এটা বাজারের জন্য ইতিবাচক। তাছাড়া দিন দিন লেনদেন বাড়ছে, বাজারে নতুন নতুন বিনিয়োগকারীর আগমন ঘটছে।

যা পুঁজিবাজারের জন্য ইতিবাচক দিক। বাজারের এ গতি চলমান থাকলে ২০১৭ সালে বিনিয়োগকারীরা তাদের পুরানো ক্ষত শুকাতো পারবেন বলে বাজার বিশ্লেষকরা মনে করেন। বাজার উন্নয়নে সংশ্লিষ্ট মহলের নেয়া ইতিবাচক পদক্ষেপের কারণে গত কয়েক মাস যাবৎই বাড়ছে সূচক ও লেনদেন। সেই ধারাবাহিকতা বছরের শেষ কার্যদিবসেও (২০১৬ সাল) যেন বিদ্যমান থাকলো।

যা আগামী বছর জুড়ে বিদ্যমান থাকবে বলে সবার প্রত্যাশা। কেননা নীতিনির্ধারকদের নেয়া পদক্ষেপগুলোর বাস্তবায়ন শুরু হলে বাজার পুরোদমে তার কাঙ্খিত গতি ফিরে পাবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

তারা বলছেন, বৃহস্পতিবার লেনদেনের শুরুতে সেল প্রেসার থাকলেও পরে ঠিকই ঘুরে দাড়িয়েছে। দিনের পর দিন সূচক এগিয়ে যাচ্ছে সামনের দিকে। এরই ধারবাহিকতায় আজ সূচক ৫০৪৯ পয়েন্টে উঠে গিয়েছিল এক পর্যায়ে। তবে বছরটি শেষ হয়েছে সূচক ৫ হাজার ৩৬ পয়েন্টে রেখে। অতএব এ কারনে বলাই যায় শেষ ভালো যার সব ভালো তার। বিশ্লেষকদের অভিমত, আগামি বছরের শুরুর দিনটাও একটি বড় ধরনের উত্থান দিয়ে চমকে দেবে বিনিয়োগকারীদের।

২০১৬ সালে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের মোট লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ৭৭৩ কোটি ৩০ লাখ টাকা৷ এর মধ্যে ক্রয়কৃত সিকিউরিটিজের পরিমাণ ৫ হাজার ৫৭ কোটি টাকা এবং বিক্রয় সিকিউরিটিজের পরিমাণ ৩ হাজার ৭১৬ কোটি ৩০ লাখ টাকা৷ সেই হিসেবে নিট বিনিয়োগ হয়েছে এক হাজার ৩৪০ কোটি ৭০ কোটি টাকা।

এক বছরে ব্যবধানে (২০১৫ সালের তুলনায় ২০১৬ সালে) দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ডিএসইতে বৈদেশিক লেনদেন বেড়েছে এক হাজার ৩০৭ কোটি ৯০ লাখ টাকা। নিট বিনিয়োগ বেড়েছে ৯৫৫ কোটি ২০ লাখ টাকা।

এদিকে ২০১৫ সালে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের মোট লেনদেন হয়েছে ৭ হাজার ৪৬৫ কোটি ৪০ লাখ টাকা৷ এর মধ্যে ক্রয়কৃত সিকিউরিটিজের পরিমাণ ৩ হাজার ৮২৫ কোটি ৪০ লাখ টাকা এবং বিক্রয়কৃত সিকিউরিটিজের পরিমাণ ৩ হাজার ৪৩৯ কোটি ৯০ লাখ টাকা৷ অর্থাৎ পুঁজিবাজারে নিট বিদেশি বিনিয়োগ ছিল ৩৮৫ কোটি ৫০ লাখ টাকা।

বিদেশি বিনিয়োগকারীদের লেনদেন বাড়াকে ইতিবাচক মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। তাদের মতে, ইতিবাচক ধারায় ফিরেছে দেশের পুঁজিবাজার। দীর্ঘদিনের আস্থাহীনতার বাজারে এখন সুবাতাস বইছে। যার কারণে দেশি বিনিযোগকারীর পাশাপাশি বাজারমুখী হচ্ছেন বিদেশিরা। পুঁজিবাজারের বিদেশি বিনিয়োগকারীদের ক্রয় প্রবণতা লক্ষণীয় যা বাজারে দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগের সংকেত প্রদান করে৷

পুঁজিবাজারে বিদেশি বিনিয়োগ প্রসঙ্গে ডিএসইর পরিচালক শাকিল রিজভী বলেন, বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বাজার পর্যবেক্ষণ করেন এবং মার্কেটে শেয়ারের দাম কম থাকলে তারা বিনিয়োগ করেন। পুঁজিবাজারে অনেক ভালো শেয়ারের এখন দাম কম রয়েছে। ফলে বিনিয়োগকারীরা বাজারমুখী হচ্ছেন। বিদেশি বিনিয়োগকারীরা সক্রিয় হওয়া মানে সামনে বাজার আরও ভালো হবে।