ambee pharmaশেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ওষূধ ও রসায়ন খাতের কোম্পানি অ্যাম্বি ফার্মার শেয়ার নিয়ে টানা দেড় মাস কারসাজি করছে। নিয়ন্ত্রক সংস্থা এ ব্যাপারে দেখেও না দেখার ভান করছে। কোন কারন ছাড়াই টানা বাড়ছে অ্যাম্বি ফার্মার দর। ২০১০ সালের শেয়ার কারসাজির সাথে জড়িত ফের পুঁজিবাজারে সক্রিয় হয়ে উঠায় বিনিয়োগকারীরা দু:চিন্তিত হয়ে পড়ছেন। তারা একের পর এক শেয়ার নিয়ে কারসাজি করছেন।

অবশ্য পুঁজিবাজারে স্বল্পমূলধনী কোম্পানির কারসাজি নতুন কিছু নয়। ২০১০ সালেও স্বল্পমূলধনী কোম্পানির শেয়ার নিয়ে সবচেয়ে বেশি কারসাজি হয়েছিল। দৃশ্যমান কোনো কারণ ছাড়াই হু হু করে এসব কোম্পানির শেয়ার দর বাড়তে দেখা যায়। এর জের ধরেই বিতর্কিত কোম্পানিগুলো প্রায় সবসময়ই আলোচনার শীর্ষে থাকে। স্বল্পমূলধনী কোম্পানিগুলোর মূলধন কম; তাই কারসাজি চক্রের টার্গেটের শীর্ষে থাকে কোম্পানিগুলো। যদিও মাঝে মধ্যে অস্বাভাবিক দর বাড়ার কারণ জানতে চেয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থার পক্ষ থেকে কিছু কিছু কোম্পানিকে নোটিশ দেয়া হয়।

ambee pharmaতবে নোটিশের জবাবে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ জানায়, দর বাড়ার পেছনে মূল্যসংবেদনশীল কোনো তথ্য নেই। তারপরেও অব্যাহত দর বাড়ার প্রবণতা কারসাজির ইঙ্গিত দেয়। আর কারসাজি চক্র তাদের ফায়দা হাসিল করে চলে গেলে দীর্ঘ মেয়াদে তার ফল ভোগ করতে হয় সাধারণ বিনিয়োগকারীদের। এ অবস্থায় কোম্পানিগুলোকে শুধু নোটিশই নয়, সঠিক সময়ে অধিকতর তদন্তের মাধ্যমে কোম্পানিগুলোর শেয়ার দর কেন বাড়ছে তা নিয়ন্ত্রক সংস্থার পক্ষ থেকে খতিয়ে দেখা উচিত বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

এদিকে গত দেড় মাসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) অ্যাম্বি ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের শেয়ারদর দ্বিগুণে উন্নীত হয়েছে। অবশ্য এর নেপথ্যে কোনো অপ্রকাশিত মূল্যসংবেদনশীল তথ্য নেই বলে স্টক এক্সচেঞ্জকে জানিয়েছে ওষুধ-রসায়ন খাতের কোম্পানিটি।

বাজার পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, ১৪ জুলাই ডিএসইতে অ্যাম্বি ফার্মার শেয়ারদর ছিল ২৯০ টাকার নিচে। দেড় মাসের ব্যবধানে শেয়ারটির দর ৫৯০ টাকা ছাড়ায়। ডিএসই কর্তৃপক্ষের চিঠির জবাবে ৮ আগস্ট কোম্পানি জানায়, শেয়ারের দর অস্বাভাবিক হারে বাড়তে পারে এমন কোনো অপ্রকাশিত মূল্যসংবেদনশীল তথ্য নেই তাদের হাতে। এর আগে জুনের শেষদিকে কোম্পানিটি জানিয়েছিল, ৪ কোটি ২৬ লাখ টাকায় গাজীপুরে ১২ বিঘা জমি কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাদের পর্ষদ।

নিয়ন্ত্রক সংস্থার নির্দেশনা অনুযায়ী এবার ১৮ মাসে হিসাব বছর গণনা করছে অ্যাম্বি ফার্মা। এ হিসাবে ৩০ জুন তাদের বর্ধিত হিসাব বছর শেষ হয়। ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত হিসাব বছরের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের ২৮ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয় অ্যাম্বি ফার্মা। সে হিসাব বছরে কোম্পানিটির নিট মুনাফা ছিল ৭৫ লাখ ২০ হাজার টাকা। শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) ৩ টাকা ১৩ পয়সা।

এদিকে ২০১৫ সালের প্রথম তিন প্রান্তিকে (জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর) কোম্পানিটির অনিরীক্ষিত ইপিএস দাঁড়িয়েছে ৩ টাকা ১০ পয়সা, আগের বছর একই সময়ে যা ছিল ৩ টাকা ৫১ পয়সা। ৩০ সেপ্টেম্বর কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য দাঁড়ায় ২৪ টাকা ৫১ পয়সা।  ডিএসইতে সর্বশেষ ৫৭৭ টাকায় অ্যাম্বি ফার্মার শেয়ার কেনাবেচা হয়। গত এক বছরে এর সর্বনিম্ন দর ছিল ২৪৩ টাকা ও সর্বোচ্চ ৫৯৭ টাকা।

১৯৮৬ সালে তালিকাভুক্ত ওষুধ কোম্পানিটির অনুমোদিত মূলধন মাত্র আড়াই কোটি টাকা, পরিশোধিত মূলধন ২ কোটি ৪০ লাখ টাকা। রিজার্ভ ৩ কোটি ৪১ লাখ টাকা। কোম্পানির মোট শেয়ারের ৭৫ দশমিক ২৬ শতাংশ এর উদ্যোক্তা-পরিচালকদের কাছে, প্রতিষ্ঠান ১০ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ এবং বাকি ১৪ দশমিক ৬৫ শতাংশ শেয়ার রয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে।

ডিএসই ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়, জুলাইয়ে বিদেশীদের সব ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের শেয়ারের একটি অংশ কোম্পানির উদ্যোক্তা-পরিচালক ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে চলে আসে। যদিও এ সময়ে কোনো স্টক এক্সচেঞ্জেই শেয়ার কেনার ঘোষণা দেননি কোম্পানিটির কোনো উদ্যোক্তা বা পরিচালক।