standard insপ্রশান্ত কুন্ডু , শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বীমা খাতের কোম্পানি স্ট্যান্ডার্ড ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডের লাইসেন্স শিগগিরই ফিরে পাচ্ছে । বীমা নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইডিআরএ কোম্পানির লাইসেন্স ফিরিয়ে দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। তবে বিষয়টি এখন পুরো নির্ভর করছে সরকারের সিদ্ধান্তের উপর। সরকার সিদ্ধান্ত দিলেই বীমা কোম্পানিটি তাদের লাইসেন্স ফিরে পেতে আর বাধা থাকবে না।

তবে এজন্য কী করা যেতে পারে, তা জানতে চেয়ে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষকে (আইডিআরএ) চিঠিও দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। মূলত এ খবরেই ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বাড়ছে এ কোম্পানির শেয়ারদর। এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আইডিআরএ’র এক সদস্য বলেন, সরকার চাইলে যেকোনো সময় এ কোম্পানির লাইসেন্স ফেরত দিতে পারে। এতে নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের কোনো আপত্তি নেই।

standard insডিএসইতে বৃহস্পতিবার এ শেয়ারের সর্বশেষ দর ৯ দশমিক ২৪ শতাংশ বেড়ে দাঁড়ায় ১৩ টাকায়। এতে কোম্পানি উঠে আসে দরবৃদ্ধির দ্বিতীয় স্থানে। গতকাল দিনভর এ শেয়ারের দর ১২-১৩ টাকার মধ্যে ওঠানামা করে। আগের কার্যদিবসের এ শেয়ারের সর্বশেষ দর ছিল ১১ টাকা ৯০ পয়সা। এদিন ৭৭ বারে কোম্পানিটির মোট ৫৪ হাজার ৭৭৭টি শেয়ার লেনদেন হয়।

এদিকে স্ট্যান্ডার্ড গার্মেন্টসে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় পুনঃবীমা দাবি বাবদ সাধারণ বীমা করপোরেশন (্এসবিসি) থেকে ২১৫ কোটি টাকা পাচ্ছে স্ট্যান্ডার্ড ইন্স্যুরেন্স। এ অর্থ পরিশোধ করা হবে স্ট্যান্ডার্ড গার্মেন্টসকে। সম্প্রতি এ বিষয়ে অনাপত্তি জানিয়ে এসবিসি বরাবর চিঠি দিয়েছে আইডিআরএ।

এসবিসির মূল্যায়ন অনুযায়ী, স্ট্যান্ডার্ড গার্মেন্টসের বীমার ২১৫ কোটি টাকা এসবিসিতে পুনঃবীমা করেছে স্ট্যান্ডার্ন্ড ইন্স্যুরেন্স। এ ২১৫ কোটি টাকাই অগ্নিবীমা দাবি বাবদ দেয়া হবে স্ট্যান্ডার্ড ইন্স্যুরেন্সকে। যদিও স্ট্যান্ডার্ড গার্মেন্টসের দাবি, তারা ৪৫০ কোটি টাকার বেশি মূল্যের বীমা করেছে স্ট্যান্ডার্ড ইন্স্যুরেন্সে। অবশিষ্ট অর্থ স্ট্যান্ডার্ড ইন্স্যুরেন্সকেই পরিশোধ করতে হবে।

এসবিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) শামীম আখতার বলেন, আইডিআরএ যেহেতু অনাপত্তি দিয়েছে, তাই দাবিটি পরিশোধ করতে কোনো বাধা নেই। তবে এজন্য একটু সময় দরকার।

২০১৩ সালের ২৮ নভেম্বর রাতে গাজীপুরের কোনাবাড়ীতে স্ট্যান্ডার্ড গ্রুপের পোশাক কারখানায় আগুন লাগে। আগুনে পুড়ে ১ হাজার ২০২ কোটি টাকার সম্পদের ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করে স্ট্যান্ডার্ড গার্মেন্টস। যদিও এর কোনো সত্যতা খুঁজে পায়নি রাষ্ট্রায়ত্ত কোনো সংস্থা।

১ হাজার ২০০ কোটি টাকার বীমা করা হয়েছে বলে স্ট্যান্ডার্ড গার্মেন্টস দাবি করলেও তা মিথ্যা প্রমাণ হয়। পরবর্তীতে ৪৫০ কোটি টাকার বীমা রয়েছে বলে জানায় স্ট্যান্ডার্ড ইন্স্যুরেন্স। কিন্তু আইডিআরএর তদন্তে তাও সঠিক নয় বলে প্রমাণ হয়।

নানা অনিয়মের কারণে গত ২১ জুন থেকে তিন মাসের জন্য স্ট্যান্ডার্ড ইন্স্যুরেন্সের লাইসেন্স স্থগিত করে আইডিআরএ। পরে কোম্পানি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলে আইডিআরের নির্দেশনা ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেন আদালত। হাইকোর্টের ওই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে যায় আইডিআরএ।

পরে চেম্বার বিচারপতি শুনানি নিয়ে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করেন। আর বিষয়টি শুনানির জন্য আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন। গত ৩০ জুলাই পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানি শেষে চেম্বার আদালতের আদেশ বহাল রেখে আইডিআরএর সিদ্ধান্তকে বৈধতা দেন আপিল বিভাগ।

শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত এ কোম্পানির অনুমোদিত মূলধন ১০০ কোটি ও পরিশোধিত মূলধন ২৯ কোটি ৫৭ লাখ ২০ হাজার টাকা। রিজার্ভের পরিমাণ ১৫ কোটি ৭২ লাখ টাকা। কোম্পানিটির মোট শেয়ার সংখ্যা ২ কোটি ৯৫ লাখ ৭২ হাজার ১৫৭। এর মধ্যে উদ্যোক্তা-পরিচালক ৫২ দশমিক ৪ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী ১০ দশমিক শূন্য ৩ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে ৩৭ দশমিক ৫৭ শতাংশ শেয়ার।

সর্বশেষ ২০১৪ সালে ১২ শতাংশ বোনাস ও লভ্যাংশ দেয় এ কোম্পানি। সমাপ্ত হিসাব বছরে এর ইপিএস হয়েছে ২ টাকা ৬৬ পয়সা, এনএভি ১৭ টাকা ৫০ পয়সা ও কর পরবর্তী মুনাফা ৬ কোটি ৫৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা। কোম্পানিটি ২০০৮ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়।