sharebazar lagoশেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ১০টি ব্যাংকের প্রায় ১২শ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করতে হবে না। এ ঘোষণায় বাজারে তালিকাভুক্ত ১০টি ব্যাংক ১২শ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রির ক্ষতি থেকে রক্ষা পেয়েছে। এ কারণে পুঁজিবাজারে ব্যাংকগুলোর শেয়ার বিক্রির প্রবণতা কমে গেছে, ফলে বাজারে এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

ব্যাংকগুলোর অতিরিক্ত বিনিয়োগের সমন্বয়সীমা বাড়াতে সরকার ও বাজার সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠানের দাবির প্রেক্ষিতে, গত সোমবার ব্যাংলাদেশ ব্যাংক বিনিয়োগ সমন্বয়ের নতুন নীতি সহায়তা ঘোষণা দিয়েছে। বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা সক্রিয় হতে সাহস পাবেন। আর তারা সক্রিয়  হলে বিদেশি ও ব্যক্তি পর্যায়ে বড় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বাজারের প্রতি আস্থা ও তারল্য বাড়বে।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, পুঁজিবাজারে মহাধসের আগে নিয়ম ভঙ্গ করে সব ব্যাংকগুলো ২০ থেকে ২২ হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত বিনিয়োগ করে। এরপর গত ছয় বছরে ২০টি ব্যাংক পুঁজিবাজারে অতিরিক্ত বিনিয়োগ সমন্বয় করলেও বিভিন্ন অজুহাতে ১০টি ব্যাংক এখনও শেয়ার বিক্রি করেনি। এরপর পুঁজিবাজারের অব্যাহত দরপতন ঠেকাতে এ উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।

এ বিষয়ে আইডিএলসি’র নির্বাহী পরিচালক মুনিরুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের উদ্যোগের ফলে পুঁজিবাজারে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। এর ফলে ব্যাংকগুলোর বড় একটা ভার কমে গেলো। বিক্রির চাপ আসার সম্ভাবনা থাকবে না।

বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সাইদুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের পলিসি সাপোর্টটি বাজারের জন্য যথাযথ উদ্যাগ। এর মধ্য দিয়ে ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগের সমন্বয় নিয়ে যে দুশ্চিন্তা ছিলো, তা দূর হলো। এর ফলে বাজারে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী আসবে। এর আগে, পুঁজিবাজারে ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগ সমন্বয় (এক্সপোজার লিমিট) সময়সীমা বাড়ানো যৌক্তিক বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা মশিউর রহমান।

গত সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র শুভংকর সাহা জানান, পুঁজিবাজারে ব্যাংকগুলোর সলো ও কনসোলিডেটেড- উভয় ভিত্তিতে অতিরিক্ত বিনিয়োগ সমন্বয়ের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের ঘোষিত নীতি সহায়তার কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

এরই মধ্যে দু’টি ব্যাংক তাদের ধারণ করা শেয়ার ও সাবসিডিয়ারি কোম্পানিতে পাওয়া ঋণ সাবসিডিয়ারি ক্যাপিটালে রূপান্তরের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে আবেদন জানিয়েছে। তাদের এ আবেদন দ্রুত বিবেচনা করার প্রয়োজনীয় কার্যক্রম নেওয়া হয়েছে।

অন্য যে আটটি ব্যাংকের অতিরিক্ত বিনিয়োগ রয়েছে, সেসব ব্যাংককে ইতোমধ্যেই নির্দেশনা দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে আবেদন করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তবে ব্যাংক থেকে সাবসিডিয়ারি কোম্পানির মূলধন বাড়ানো সংক্রান্ত আবেদন বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠানোর আগে তা সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের সাবসিডিয়ারি কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদে অনুমোদনের প্রয়োজন থাকায়- এ আবেদন ব্যাংক থেকে আসতে কিছু বিলম্ব হচ্ছে।

ফলে অনুমোদন দিতে কিছুটা সময় লাগছে। ব্যাংকগুলোর আবেদন পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে দ্রুত অনাপত্তি দেওয়া হবে। এ ব্যবস্থা  নেওয়ার ফলে একদিকে ব্যাংকগুলোর নিজস্ব সাবসিডিয়ারির মূলধন বাড়বে, অন্যদিকে তাদের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগসীমা কমে আইনি সীমার মধ্যে নেমে আসছে। এভাবে সব ব্যাংকই আইনি সীমার মধ্যে চলে আসবে। এ প্রক্রিয়ায় কোনো ব্যাংককেই তার অতিরিক্ত বিনিয়োগ সমন্বয়ের জন্য কোনো শেয়ার বিক্রি করতে হবে না।