নিয়ন্ত্রক সংস্থার উপর আস্থা নেই বিনিয়োগকারীদের
শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারে আজ সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে ফের সুচকের দরপতনের মধ্যে দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। তবে সুচকের দরপতনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে বিনিয়োগকারীদের মাঝে। তারা বর্তমান বাজার পরিস্থিতিকে কারসাজি বাজারের লক্ষন বলে মনে করছেন। কারসাজি চক্রের ইচ্ছায় বাজার বাড়ে, তাদের ইচ্ছায় বাজার দরপতন ঘটে। এছাড়া নিয়ন্ত্রক সংস্থার উপর আস্থা নেই বিনিয়োগকারীদের।
এছাড়া পুঁজিবাজার নীতি নির্ধারকরা বাজার উন্নয়নে নানামুখী পদক্ষেপ নিলেও নিয়ন্ত্রণ সংস্থার উপর বিনিয়োগকারীদের আস্থার সংকট থাকায় বাজার ঘুরে দাঁড়াতো পারছে না। বাজার আজ ভাল তো কাল খারাপ। এ পরিস্থিতির মধ্যে দীর্ঘ ৬ বছর অতিবাহিত করেছে বিনিয়োগকারীরা।
২০১০ সালে ধসের ছয় বছর পরও বিনিয়োগকারীর কাছে এখনো আস্থাহীন দেশের পুঁজিবাজার। এখনো এটি পুঁজি হারানোর বাজার। ভালো-মন্দ বেশির ভাগ কোম্পানিতে বিনিয়োগ করেও লাভের দেখা মিলছে না। তাই বাজারে আসতে নতুন করে আগ্রহ তৈরি হচ্ছে না বিনিয়োগকারীদের মধ্যে।
এছাড়া সংকটের সময় পুঁজিবাজার পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে বিভিন্ন মহল থেকে নানা উদ্যোগের কথা বলা হয়। পরে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে সেগুলো আর বাস্তবায়ন করা হয় না। বারবার এ ঘটনার পুনরাবৃত্তি হওয়ায় পুঁজিবাজার-সংশ্লিষ্ট ও বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থার ব্যাপক সংকট তৈরি হয়েছে। তাই বর্তমান বাজার প্রেক্ষাপটে বিনিয়োগকারীদের মাঝে আস্থা সংকট কাটলে হলে বাজার টানা স্থিতিশীল থাকতে হবে। তেমনি লেনদেনের পরিমান দ্রুত বাড়তে হবে।
এদিকে টানা সাত কার্যদিবস দরপতনের পর মঙ্গলবার ঘুরে দাঁড়ালেও আজ আবারও পতন হয়েছে দেশের উভয় শেয়ারবাজারে। এদিন দুই স্টক এক্সচেঞ্জেই বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দরপতন হয়েছে। তবে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের লেনদেন কমলেও অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে বেড়েছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ব্যাংকগুলোর অতিরিক্ত বিনিয়োগ (এক্সপোজার) সমন্বয় ইস্যু নিয়ে বেশ কিছু দিন দরপতন ছিল শেয়ারবাজারে। এখন বাংলাদেশ ব্যাংক এক্সপোজার সমন্বয়ের বিষয়টি সমাধানের প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখেছে। সেই খবরে গতকাল সূচকের উর্ধ্বগতি দেখা গেলেও একদিন পরই আবার পতন হয়েছে।
বিশ্লেষণে দেখা গেছে, বুধবার ঢাকা স্টক এক্সেচেঞ্জ (ডিএসই) এর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ১৩ পয়েন্ট কমে ৪ হাজার ২৫৮ পয়েন্টে অবস্থান করছে। এছাড়া ডিএস ৩০ সূচক ২ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৬৪১ পয়েন্টে এবং ডিএসইএস শরিয়াহ সূচক ১ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৪২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
ডিএসইতে টাকার অংকে মোট লেনদেন হয়েছে ৪০০ কোটি টাকা। যা আগের দিনের চেয়ে ৫ কোটি টাকা কম। মঙ্গলবার ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছিল ৪০৫ কোটি টাকা। ডিএসইতে মোট ৩১৮টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ড ইউনিটের লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দাম বেড়েছে ৯৪ টির, কমেছে ১৯৮ টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২৬টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দর।
অপরদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সিএসসিএক্স ১২ পয়েন্ট কমে ৭ হাজার ৯৬৯ পয়েন্টে অবস্থান করছে। এছাড়া সিএসই ৫০ সূচক দশমিক ৭৬ পয়েন্ট কমে ৯৬১ পয়েন্টে, সিএসপিআই সূচক ২৩ পয়েন্ট কমে ১৩ হাজার ১০৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। তবে সিএসই ৩০ সূচক ৭ পয়েন্ট বেড়ে ১২ হাজার ১৪১ পয়েন্টে, এবং সিএসআই সূচক দশমিক শূণ্য ৯ পয়েন্ট বেড়ে ৯১৬ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
সিএসইতে টাকার অংকে লেনদেন হয়েছে ২৫ কোটি ১৭ লাখ টাকা। সিএসইতে মোট ২৩৫টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ড ইউনিটের লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৬৯টির, কমেছে ১৩৯টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২৭টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দর।