শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণের পরের কার্যদিবসে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) বড় উত্থান হলেও দ্বিতীয় কার্যদিবসে ফের দরপতনে পুঁজিবাজার। মুলত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ বা সুষ্ঠু হয়নি বলে যুক্তরাষ্ট্রের মন্তব্যের পর কিছুটা আতঙ্কিত বিনিয়োগকারীরা। কারণ পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীদের মধ্যে নিষেধাজ্ঞা ইস্যু নিয়ে তৈরী হয়েছে নতুন আতঙ্ক।

যে কারনে জাতীয় নির্বাচন পরবর্তী প্রথমদিন পুঁজিবাজারে মূল্যসূচক উত্থান হলেও দ্বিতীয় কার্যদিবসে দরপতনে লেনদেন শেষ হয়েছে। এদিন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) যে কয়টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে, দাম কমেছে তার দ্বিগুণের বেশি কোম্পানির। ফলে কমেছে প্রধান মূল্যসূচক।

অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশি সংখ্যক কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে। তবে বেড়েছে মূল্যসূচক। অবশ্য বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার পাশাপাশি কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। এর আগে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকেন্দ্রীক রাজনৈতিক অস্থিরতার পরিপ্রেক্ষিতে এক মাসের বেশি সময় ধরে নেতিবাচক ধারায় থাকে পুঁজিবাজার।

নতুন বছর ২০২৪ সালের শুরুতেও পুঁজিবাজারে নেতিবাচক প্রবণতা দেখা যায়। ফলে বিনিয়োগকারীদের বিক্রির চাপে প্রায় প্রতিদিনই লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ কোম্পানির দরপতন হয়। সেই সঙ্গে ডিএসইতে লেনদেন আশঙ্কাজনক হারে কমে তিনশ কোটি টাকার নিচে নেমে যায়। তবে ভোটের আগে শেষে কার্যদিবস বিক্রির চাপ কিছুটা কমে।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, ডিএসইতে লেনদেনের শুরুতে উত্থান হলেও যুক্তরাষ্ট্রের এক বিবৃতিতে বিনিয়োগকারীরা কিছুটা আতঙ্কিত হয়ে শেয়ার বিক্রি শুরু করেন। দিনশেষে দরপতন অব্যাহত থাকে। মুলত যুক্তরাষ্ট্রের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশে রাজনৈতিক বিরোধী দলের হাজার হাজার সদস্যকে গ্রেপ্তার এবং নির্বাচনের দিন অনিয়মের খবরে তারা উদ্বিগ্ন।

যুক্তরাষ্ট্রের এমন উদ্বেগ প্রকাশের পর মঙ্গলবার পুঁজিবাজারে উত্থান ধরে রাখা সম্ভব হয়নি। তবে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৬২৬৮ পয়েন্টে। যা আগেরদিন বেড়েছিল ২৫ পয়েন্ট।

মঙ্গলবার ডিএসইতে ৪৯৫ কোটি ৪০ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। যার পরিমাণ আগের দিন হয়েছিল ৪৪১ কোটি ১৪ লাখ টাকা। এ হিসাবে লেনদেন বেড়েছে ৫৪ কোটি ২৬ লাখ টাকার বা ১২ শতাংশ। এদিন ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৪৬ টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দর বেড়েছে ৫৩ টি বা ১৫.৩২ শতাংশের। আর দর কমেছে ১১০ টি বা ৩১.৭৯ শতাংশের ও দর পরিবর্তন হয়নি ১৮৩ টি বা ৫২.৮৯ শতাংশের।

অপরদিকে সিএসইতে মঙ্গলবার ৬ কোটি ২৯ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এদিন সিএসইতে লেনদেন হওয়া ১৬৭ টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে ৫১ টির, কমেছে ৪২ টির এবং পরিবর্তন হয়নি ৭৪ টির।

এদিন সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১২ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮৫৮১ পয়েন্টে। আগেরদিন সিএসইতে ১০ কোটি টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছিল। ওইদিন সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৬০ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছিল ১৮৫৬৮ পয়েন্টে।