শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত প্রকৌশল খাতের কোম্পানি আজিজ পাইপ লিমিটেডের উদ্যোক্তা পরিচালকের গোপনে শেয়ার বিক্রির হিড়িক পড়েছে। উচ্চদামে গোপনে মোটা অঙ্কের শেয়ার বিক্রি করে দিয়েছেন আজিজ পাইপ লিমিটেডের উদ্যোক্তা ও পরিচালকরা। এমন অনিয়ম করলেও কোম্পানিটির বিরুদ্ধে দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এবং স্টক এক্সচেঞ্জ কর্তৃপক্ষ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ডিএসইর এক কর্মকর্তা বলেন, যেসব কোম্পানির উদ্যোক্তা ও পরিচালকরা ঘোষণা ছাড়াই শেয়ার বিক্রি করেছেন তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোনো কোম্পানির উদ্যোক্তা ও পরিচালক তাদের শেয়ার বিক্রি করতে চাইলে স্টক এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে তথ্য প্রকাশ করতে হয়।

ডিএসই সূত্রে জানা যায়, ৩০ জুন, ২০২২ তারিখে কোম্পানিটিতে উদ্যোক্তা পরিচালকদের শেয়ার ধারন ছিল ২৩.৯৩ শতাংশ। এক বছর পর ৩০ জুন, ২০২৩ তারিখে উদ্যোক্তা পরিচালকদের শেয়ার কমে দাঁড়িয়েছে ১৩.৪৯ শতাংশে। এরমধ্যে গত মাসে অর্থাৎ জুন মাসেই উদ্যোক্তা পরিচালকরা শেয়ার বিক্রি করে দিয়েছেন ৬.৫৮ শতাংশ।

অথচ এ সময়ে তারা শেয়ার বিক্রির কোনো ঘোষণাই দেননি। সর্বশেষ ৩০ জুন, ২০২০ অর্থবছরে আজিজ পাইপস বিনিয়োগকারীদের ১ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছিল। এর পরের দুই বছর ৩০ জুন, ২০২১ এবং ৩০ জুন, ২০২২ অর্থবছর কোনো ডিভিডেন্ড দেয়নি। সদ্য সমাপ্ত ৩০ জুন, ২০২৩ অর্থবছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে বা ৯ মাসে (জুলাই’২২-মার্চ’২৩) কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ৪ টাকা ০৩ পয়সা। যা আাগের বছর একই সময়ে লোকসানছিল ৩ টাকা ৩৮ পয়সা। অর্থাৎ উৎপাদন বন্ধ থাকার কারণে কোম্পানিটির পুঞ্জীভূত লোকসান প্রতিবছরই বাড়ছে।

সূত্র মতে, মূলধন সংকট, কাঁচা মালের সমস্যা, ব্যাংক ঋণের জটিলতাসহ নানাবিধ সমস্যায় পড়ে ২০২১ সালেল ৮ নভেম্বর উৎপাদন বন্ধ ঘোষণা করেছে আজিজ পাইপ লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদ। এরপর ২০২২ সালের অক্টোবর মাসে কোম্পানিটি আংশিক উৎপাদনে ফেরার ঘোষণা দেয়। কিন্তু ব্যাপক সমস্যায় নিমজ্জিত থাকা কোম্পানিটি প্রকৃতপক্ষে উৎপাদনে ফিরতে পারেনি। এরপর আরও দুই-একবার কোম্পানিটিকে উৎপাদনের ফেরানোর চেষ্টা করলেও সফল হতে পারেনি।

তবে উৎপাদন বন্ধ থাকলেও কোম্পানিটির শেয়ার নিয়ে কারসাজি থেমে নেই। বেশ কিছু দিন ধরে শেয়ারটি নিয়ে ফের কারসাজিকারিরা মাথা ছাড়া দিয়ে উঠছে। তাদের যাদুর কাঠিতে গত সপ্তাহে শেয়ারটির দামে বড় উল্লম্ফন হয়েছে। যে কারণে শেয়ারটি সাপ্তাহিক দাম বৃদ্ধির শীর্ষ তালিকায় স্থান করে নিয়েছে। সপ্তাহের ব্যবধানে শেয়ারটির দাম বেড়েছে ২৮.৭৩ শতাংশ। সপ্তাহের শুরুতে শেয়ারটির দাম ছিল ১০০ টাকা ৬০ পয়সা। আর সপ্তাহশেষে দাম উঠেছে ১২৯ টাকা ৫০ পয়সায়।

তবে শেয়ারটির দাম বাড়লে কোম্পানির উদ্যোক্তা পরিচালকরাই বেশি লাভবান হন বলে অভিযোগ রয়েছে। কারণ শেয়ারের দাম বাড়লেই তারা তাদের হাতে থাকা শেয়ার বিক্রি করে দেন। গত এক বছরে ঘোষণা ছাড়াই কোম্পানির উদ্যোক্তা পরিচালকরা কোম্পানিটির ১০.৪৪ শতাংশ শেয়ার বিক্রি করে দিয়েছেন। এরমধ্যে গত মাসে সবচেয়ে বেশি পরিমাণে শেয়ার বিক্রি করেছেন।