শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেছেন, আমরা পুঁজিবাজার নিয়ে আরও এগিয়ে যেতে চাই। আগে মার্কেটের আকার ছিলো ৩ লাখ কোটি টাকা, বর্তমানে তা হয়েছে প্রায় ৮ লাখ কোটির কাছাকাছি। আগে একশ-দুইশো কোটি টাকাও লেনদেন হতো না এখন লেনদেন হাজারের আশেপাশে থাকে।

বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন ভবনের মাল্টিপারপাস হলে অনুষ্ঠিত ক্যাপিটাল মার্কেট স্টেবিলাইজেশন ফান্ড (সিএমএসএফ) আয়োজিত ‘সিএমএসএফের ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কাঠামো’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএসইসি চেয়ারম্যান এসব কথা বলেন।

শিবলী রুবাইয়াত বলেন, করোনা ও ইউক্রেন যুদ্ধের মতো একের পর এক ধাক্কা এসেছে আমাদের বাজারের জন্যে। আমরা সামলাতে পেরেছি। সামনে আমরা ফ্লোর প্রাইজও তুলে দিতে পারবো বলে আশা করছি।

সিএমএসএফের কার্যক্রম নিয়ে বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, বিনিয়োগ করলে বিপদ থাকবে এই কথাটা সত্যি কিন্তু সিএমএসএফের ক্ষেত্রে এই রিস্ক যতোটা সম্ভব কম রাখা যায় আমরা সেই চেষ্টাই করছি। কারণ সিএমএসএফ অন্যের টাকা নিয়ে কাজ করছে। অসংখ্য বিনিয়োগকারীর প্রাপ্য টাকা এনে আমরা এই ফান্ড তৈরি করেছি। প্রথম বছরেই আমরা এই ফান্ডে ১১ কোটি টাকা অ্যাড করতে পরেছি। যেখান থেকে ব্যবসায়ীরা অর্থ নিয়ে তাদের ব্যবসায়িক কাজে ব্যবহার করতে পারবেন।

তিনি বলেন, বিনিয়োগকারীদের প্রাপ্য অনেক বড় একটা এমাউন্ট আটকে রেখেছিলো কোম্পানিগুলো। আমরা যখনই সিএমএসএফ চালু করলাম তখনই অনেক কোম্পানি নিজে নিজে ক্লেইম স্যাটেল করা শুরু করলো। এখনও অনেক কোম্পানি আছে যারা বিনিয়োগকারীদের অর্থ আটকে রেখেছে, খুব শিগগিরই তাদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নিবো।

২ শতাংশ শেয়ার থাকা বাধ্যতামূলক প্রসঙ্গে বিএসইসির এই চেয়ারম্যান বলেন, ডিরেক্টরদের ২ শতাংশ শেয়ার থাকা বাধ্যতামূলক হবার কারণে অনেক কোম্পানি বাজারে আসতে চায় না। কিন্তু কিছু দুষ্ট লোকের কারণে আমাদের এমন সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। তারা প্রতারণা করার জন্যে বাজারে আসে। তারপর বিনিয়োগকারীদের ঘাড়ে কোম্পানি চাপিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায়। এসব থেকে বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষিত রাখার জন্যেই আমরা পরিচালকদের ২ শতাংশ শেয়ারের মালিক হওয়ার শর্ত রেখেছি।

তিনি বলেন, ইতোমধ্যে ক্যাপিটাল মার্কেট স্টেবিলাইজেশন ফান্ড (সিএমএসএফ) থেকে শেয়ারবাজারে ২২৫ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে। প্রথম বছর এই ফান্ড থেকে মুনাফা এসেছে ১১ কোটি টাকা। এ বছর আরও বেশি আসবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

বিএসইসির চেয়ারম্যান বলেন, আমরা সব দিক থেকেই দেওয়াল দিয়ে একটি স্থিতিশীল পুঁজিবাজার তৈরী করার চেষ্টা করছি। পুঁজিবাজারে সরকারী বন্ডগুলোর লেনদেন শুরু হলে লেনদেন হাজার কোটি টাকা থেকে বেড়ে আরও অনেক বেশি হবে বলে আশা প্রকাশ করেন বিএসইসির চেয়ারম্যান। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএসইসির কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ, এফবিসিসিআই এর সভাপতি মোঃ জসিম উদ্দিন।

সেমিনারে সিএমএসএফ-এর রিস্ক ম্যানেজম্যান্ট কমিটি (আরএমসি) চেয়ারম্যান ডঃ সৈয়দ আমিনুল করিমের স্বাগত বক্তব্যের পর বিওজি এবং আরএমসি সদস্য ডাঃ শেখ তানজিনা দীপ্তির সিএমএসএফের ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কাঠামো শিরোনামে একটি মূল প্রেজেন্টেশন প্রদান করেন।