শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বিমা খাতের কোম্পানি প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্সের মুনাফা ধসের সাথে সাথে লভ্যাংশে কমিয়ে অর্ধেক করা হয়েছে। আগের বছর ২০ শতাংশ লভ্যাংশ দেয়া কোম্পানিটি এবার ১০ শতাংশ ঘোঘণা দিয়েছে। গত বছর লভ্যাংশ ছিল বোনাস শেয়ার, এবার দেয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে নগদে। অর্থাৎ বিনিয়োগকারীরা শেয়ার প্রতি পাবেন ১ টাকা করে।

গত ডিসেম্বরে সমাপ্ত অর্থবছরের হিসাব পর্যালোচনা করে সোমবার কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। হিসাব অনুযায়ী কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে ৩ টাকা ৩ পয়সা। আগের বছর এই আয় ছিল ৪ টাকা ৪৮ পয়সা।

এদিকে প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্সের ২০২১ সালের শেষ প্রান্তিকের (অক্টোবর-ডিসেম্বর ২১) ব্যবসায় লোকসান হয়েছে। যাতে করে কোম্পানিটির আগের বছরের থেকে মুনাফা কমেছে। তবে যে পরিমাণ মুনাফা কমেছে, তার চেয়ে বেশি হারে কমেছে লভ্যাংশের পরিমাণ।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।কোম্পানিটির ২০২১ সালের ৯ মাসে (জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর) শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয়েছিল ৩.০৮ টাকা। তবে বছর শেষে এই মুনাফার পরিমাণ কমে দাঁড়িয়েছে ৩.০৩ টাকায়। অর্থাৎ কোম্পানিটির শেষ প্রান্তিকে লোকসান হয়েছে ০.০৫ টাকা।

ডিএসইর ওয়েবসাইটে প্রদত্ত তথ্য অনুযায়ি, কোম্পানিটির ২০২১ সালের প্রথম প্রান্তিকে ইপিএস হয়েছিল ১.০১ টাকা। যা দ্বিতীয় প্রান্তিকে ১.৭৪ টাকা ও তৃতীয় প্রান্তিকে ০.৪৯ টাকা হয়েছিল। এতে করে ৩টি প্রান্তিকের একত্রে বা ৯ মাসে ইপিএস দেখানো হয় ৩.০৮ টাকা। এদিকে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ গতকাল (২১ মার্চ) ২০২১ সালের পুরো বছরের যে আর্থিক হিসাব প্রকাশ করেছে, সেখানে ইপিএস দেখিয়েছে ৩.০৩ টাকা। এ হিসাবে শেষ প্রান্তিকে কোম্পানিটির লোকসান হয়েছে।

কোম্পানিটির ৯ মাসে শেয়ারপ্রতি ৩.০৮ টাকা হিসেবে নিট মুনাফা হয়েছিল ১২ কোটি ৫২ লাখ টাকা। যা ১২ মাসে বা পুরো বছরে শেয়ারপ্রতি ৩.০৩ টাকা হিসেবে নেমে এসেছে ১২ কোটি ৩২ লাখ টাকায়। অর্থাৎ শেষ প্রান্তিকে লোকসান হয়েছে ২০ লাখ টাকা। শেষ প্রান্তিকে লোকসানের কারনে কোম্পানিটির আগের বছরের তুলনায় ২০২১ সালে মুনাফা কমেছে। আগের বছরের ৫.৩৮ টাকার ইপিএস এ বছর কমে হয়েছে ৩.০৩ টাকা। অর্থাৎ ইপিএস কমেছে ২.৩৫ টাকা বা ৪৪ শতাংশ। তবে লভ্যাংশ নেমে এসেছে অর্ধেকে।

কোম্পানিটির ২০২১ সালের অর্জিত ১২ কোটি ৩২ লাখ টাকার নিট মুনাফার মধ্য থেকে ১০ শতাংশ হারে শেয়ারপ্রতি ১ টাকা হিসাবে শেয়ারহোল্ডারদেরকে ৪ কোটি ৭ লাখ টাকার নগদ লভ্যাংশ দেওয়া হবে। মুনাফার বাকি ৮ কোটি ২৫ লাখ টাকা বা ৬৭ শতাংশ রিজার্ভে যোগ হবে।

এছাড়া ডিসেম্বর শেষে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি সম্পদ দেখানো হয়েছে ২৫ টাকা ২৫ পয়সা। আগের বছরের ডিসেম্বর শেষে সম্পদ দেখানো হয় ২৬ টাকা ৬২ পয়সা, যা বোনাস শেয়ার সমন্বয়ের পর হয় ২২ টাকা ১৮ পয়সা। যারা এই লভ্যাংশ নিতে চান, তাদের আগামী ২৮ এপ্রিল শেয়ার ধরে রাখতে হবে। অর্থাৎ সেদিন হবে লভ্যাংশসংক্রান্ত রেকর্ড ডেন। লভ্যাংশ চূড়ান্ত করতে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে বার্ষিক সাধারণ সভা ডাকা হয়েছে আগামী ২৬ জুন।

২০২০ সাল থেকে কোম্পানিটির শেয়ারদর বাড়তে থাকে অস্বাভাবিক হারে। ২০২০ সালের ৩১ মে শেয়ারদর ছিল ৩৭ টাকা ৯০ পয়সা। ১৮ অক্টোবর তা ছাড়ায় ১৬০ টাকা। সেখান থেকে টানা কমতে কমতে এখন দর দাঁড়িয়েছে ৬২ টাকা ৮০ পয়সা। আবার দর যখন বাড়ছিল, তখন কোম্পানিটির বিপুল পরিমাণ শেয়ার হাতবদল হয়েছে।

এক দিনে ২৩ থেকে প্রায় ২৬ লাখ পর্যন্ত শেয়ার হাতবদলের ঘটনাও আছে। সেটি এখন নেমেছে তলানিতে। শেয়ারদর বাড়ার পেছনে কাজ করেছে নানা গুজব, যার একটি হলো নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইডিআরএর নানা উদ্যোগে বিমা কোম্পানিগুলোর আয় ব্যাপকভাবে বেড়ে যাবে।