শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ওষুধ খাতের কোম্পানি রেনাটা লিমিটেডের ২৩৭ কোটি টাকার শেয়ার কিনেছে রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ লিমিটেড। গতকাল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ব্লক মার্কেট থেকে কোম্পানিটির ২৩ লাখ বা ২ দশমিক ৬০ শতাংশ শেয়ার কিনেছে আইসিবি। ডিএসইতে গতকাল ১ হাজার ২৬ টাকা ২০ পয়সায় রেনাটার শেয়ার লেনদেন হয়েছে আর ব্লক মার্কেট থেকে আইসিবি ১ হাজার ৩০ টাকায় কোম্পানিটির শেয়ার কিনেছে।

আইসিবির কর্মকর্তারা বলছেন, রেনাটা দেশের ওষুধ খাতের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় কোম্পানি। ধারাবাহিকভাবে কোম্পানিটির ব্যবসা ও মুনাফায় প্রবৃদ্ধি হচ্ছে। তাছাড়া পুঁজিবাজারের স্থিতিশীলতা রক্ষায় আইসিবিকে ভূমিকা রাখতে হয়। এজন্য নিয়মিত আইসিবি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার কিনে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় রেনাটার শেয়ার কিনেছে তারা।

গতকাল ডিএসইর ব্লক মার্কেটে পাঁচটি কোম্পানির ২৪ লাখ ২৩ হাজার ৩৫০টি শেয়ার ২৩৭ কোটি ৬৭ লাখ টাকায় লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে রেনাটার ২৩ লাখ শেয়ার ২৩৬ কোটি ৯০ লাখ টাকায় লেনদেন হয়েছে। আর গতকাল ডিএসইতে মোট ৩৪৮ কোটি ১৩ লাখ ৮৭ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছে।

আইসিবির কাছে আরো আগে থেকেই রেনাটার উল্লেখযোগ্যসংখ্যক শেয়ার ছিল। দীর্ঘদিন ধরেই কোম্পানিটির পর্ষদে আইসিবির মনোনীত পরিচালক ছিল। আইসিবির বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আবুল হোসেন দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই কোম্পানিটির পর্ষদে পরিচালক হিসেবে ছিলেন। তবে এ বছরের জানুয়ারিতে তিনি রেনাটার পর্ষদ থেকে পদত্যাগ করেন, যা ২৮ জানুয়ারি কোম্পানিটির পর্ষদ সভায় অনুমোদন করা হয়। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত শেয়ারহোল্ডিং তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, আইসিবি ইউনিট ফান্ডের কাছে ৪ দশমিক ৬১ শতাংশ এবং আইসিবির কাছে রেনাটার ৩ দশমিক ৭২ শতাংশ শেয়ার ছিল। এ বছরের ১৫ মার্চ পর্যন্ত আইসিবির কাছে থাকা রেনাটার শেয়ার লক ইন ছিল।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গতকাল আইসিবি সিকিউরিটিজ ট্রেডিং কোম্পানি লিমিটেডের মাধ্যমে আইসিবি ইউনিট ফান্ড ও আইসিবির বিও হিসাবে রেনাটার শেয়ার কেনা হয়েছে। ব্লক মার্কেটের পাশাপাশি সাধারণ মার্কেটেও গতকাল রেনাটার শেয়ার লেনদেনের শীর্ষে ছিল।

সর্বশেষ অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে, চলতি হিসাব বছরের প্রথমার্ধে (জুলাই-ডিসেম্বর) রেনাটা লিমিটেডের সম্মিলিত শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ২২ টাকা ৪৫ পয়সা, আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ১৯ টাকা ১৬ পয়সা। দ্বিতীয় প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) কোম্পানিটির সম্মিলিত ইপিএস হয়েছে ১০ টাকা ৮৩ পয়সা, আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ৯ টাকা ৬৫ পয়সা। ৩১ ডিসেম্বর প্রতিষ্ঠানটির সম্মিলিত শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ২২২ টাকা ৯১ পয়সা।

৩০ জুন সমাপ্ত ২০১৯ হিসাব বছরের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের মোট ১১০ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছে রেনাটা লিমিটেড। এর মধ্যে ১০০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ। আর বাকি ১০ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ। নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে, সমাপ্ত হিসাব বছরে কোম্পানিটির সম্মিলিত নিট মুনাফা হয়েছে ৩৭৫ কোটি ৬০ লাখ টাকা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ৩১০ কোটি ৬০ লাখ টাকা। এ সময়ে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে সম্মিলিতভাবে ৪৬ টাকা ৬৩ পয়সা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ৩৮ টাকা ৫৭ পয়সা। ৩০ জুন কোম্পানিটির এনএভিপিএস দাঁড়ায় সম্মিলিতভাবে ২৩০ টাকা ৯০ পয়সা।

১৯৭৯ সালে পুঁজিবাজারে আসা রেনাটা লিমিটেডের অনুমোদিত মূলধন ২৫০ কোটি টাকা। বর্তমানে পরিশোধিত মূলধন ৮৮ কোটি ৫৮ লাখ ৯০ হাজার টাকা। রিজার্ভে রয়েছে ১ হাজার ৭৭১ কোটি ২৬ লাখ টাকা। কোম্পানিটির মোট শেয়ারের ৫১ দশমিক ১৭ শতাংশ উদ্যোক্তা-পরিচালক, ১৯ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী, ২২ দশমিক ৭৭ শতাংশ বিদেশী বিনিয়োগকারী ও বাকি ৭ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে।