dulamia-cottonফয়সাল মেহেদী, ঢাকা: ধারাবাহিক লোকসানে থাকার পরেও দর বাড়ার দিক থেকে দাপুটে অবস্থানে রয়েছে দুলামিয়া কটন স্পিনিং মিলস লিমিটেড। বস্ত্র খাতের  এ কোম্পানির শেয়ার দর গেল সাত কার্যদিবস ধরে টানা বাড়ছে। আজ  ও ১০ শতাংশ বেড়ে দর বৃদ্ধির শীর্ষে অবস্থান নেয় কোম্পানিটি। এছাড়াও এক বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ অবস্থানে উঠেছে স্বল্পমূলধনী ও পুঁঞ্জিভুত লোকসানি এ কোম্পানিটির শেয়ার দর।প্রাdulamia-cotton-grap

প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, গত বছরের ২১ ডিসেম্ভর শেয়ারটির দর ছিল ৭.২০ টাকা। পরবর্তী কার্যদিবস থেকে শেয়ারটির দর ধারাবাহিকভাবে বাড়তে থাকে। সোমবারও দিনভর ৯.২০ টাকা থেকে ৯.৯০ টাকার মধ্যে ওঠা-নামা করে এবং আগের দিনের তুলনায় শেয়ারপ্রতি ১০ শতাংশ বেড়ে সর্বশেষ লেনদেন হয় ৯.৯০ টাকা দরে। যা গত এক বছরের মধ্যে শেয়ারটির সর্বোচ্চ দর। গতকাল কোম্পানিটির মোট ১ লাখ ১৮ হাজার ৮৫টি শেয়ার ১০১ বার হাতবদল হয়।

তথ্য বিশ্লেষনে দেখা গেছে, পাঁচ বছর ধরে কোম্পানিটি টানা লোকসানে রয়েছে। সর্বশেষ সমাপ্ত অর্থবছরে শেয়ারটির লোকসান দাঁড়িয়েছে ২ কোটি ২১ লাখ ২০ হাজার টাকা এবং শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ২.৯৩ টাকা। আলোচ্য বছর শেয়ারপ্রতি সম্পদ মূল্য দাঁড়িয়েছে ২৪.৭১ টাকা ঋণাত্বক। এছাড়া কোম্পানিটি দীর্ঘদিন ধরে ‘নো’ ডিভিডেন্ড ঘোষণা দিয়ে আসেছে।

এদিকে চলতি অর্থবছরের সর্বশেষ প্রকাশিত প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর’ ১৬) দুলামিয়া কটনের শেয়ারপ্রতি লোকসান দাঁড়িয়েছে ০.৮৯ টাকা। আগের বছরের একই সময়ে শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছিল ০.৮০ টাকা। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে শেয়ারপ্রতি লোকসান বেড়েছে ০.০৯ টাকা।
এ ছাড়াও কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ শেয়ার ধারণ সংক্রান্ত নিয়ন্ত্রক সংস্থার (বিএসইসি) নির্দেশনা লঙ্ঘন করেছে।

কোম্পানিটির মোট ৭৫ লাখ ৫৬ হাজার ৬০০ শেয়ার রয়েছে। বিএসইসির নির্দেশনা অনুযায়ী, উদ্যোক্তা/পরিচালকদের সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণ করার কথা। অথচ এ কোম্পানির উদ্যোক্তা/পরিচালক সম্মিলিতভাবে মাত্র ২১.০৪ শতাংশ শেয়ার ধারণ করেছে। বাকী শেয়ারের মধ্যে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা ৩.৪০ শতাংশ এবং ৭৫.৫৬ শতাংশ শেয়ার ধারণ করেছে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা।

উল্লেখ্য, ১৯৮৯ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া এ কোম্পানিটির অনুমোদিত মূলধন ৩০ কোটি টাকা এবং পরিশোধিত মূলধন ৭ কোটি ৫৫ লাখ ৭০ হাজার টাকা। বর্তমানে এ কোম্পানিটির পুঁঞ্জিভুত লোকসান দাঁড়িয়েছে ২৬ কোটি ২৩ লাখ টাকা। ৩০ জুন’ ১৬ পর্যন্ত কোম্পানিটির দায়ের পরিমাণ ৭ কোটি ১৬ লাখ ৬০ হাজার টাকা।

বাজার সংশ্লিষ্টদের মতে, দুর্বল এ কোম্পানির শেয়ার দর টানা বাড়ার কোনো যৌক্তিকতা নেই। তারপরেও শেয়ারটির দর যেভাবে বাড়ছে তাতে মনে হচ্ছে এর পেছনে কারসাজি চক্রের হাত রয়েছে। এ ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে নজরধারী বাড়াতে হবে এবং বিনিয়োগকারীদেরও সতর্ক থাকতে হবে।