dse-cseশেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারে অস্থিরতা ধীরে ধীরে কাটতে শুরু করছে। সরকার যেকোনো মূল্যে পুঁজিবাজারকে স্থিতিশীল রাখবে বানিজ্যমন্ত্রীর এমন বক্তব্যে বিনিয়োগকারীরা বাজার নিয়ে নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করছেন। এছাড়া বাজার যেকোনো মূল্যে স্থিতিশীল রেখেই দেশের অর্থনীতি এগিয়ে যাবে বলে তোফায়েল আহম্মেদ বলেছেন।

একটি দেশের উন্নয়নের জন্য পুঁজিবাজার একটি গুরুত্ব ভূমিকা পালন করে। প্রতিটি রাষ্ট্রের উন্নতির পেছনে পুঁজিবাজার বড় অবদান রাখে। আমাদের বাজারও অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখছে।

বানিজ্যমন্ত্রীর এমন বক্তেব্যর পর বিনিয়োগকারীদের মাঝে আশার আলো জাগতে শুরু করছে। আর সপ্তাহজুড়ে লেনদেন বাড়াকে কেন্দ্র করে বিনিয়োগকারীদের মাঝে আলোচনার শেষ নেই। বিনিয়োগকারীরা বর্তমান বাজার পরিস্থিতি নিয়ে নতুন করে ভাবতে শুরু করছে।

তেমনি বিনিয়োগকারীরা নতুন করে বিনিয়োগমুখী হওয়ার চিন্তা ভাবনা শুরু করছেন। সরকারের নীতি নির্ধারকসহ সব মহলে আন্তরিকতার ফলে বাজার স্থিতিশীলতার আভাস দেখা গেছে। এ গতি অব্যাহত থাকলে শিগরিই লেনদেন হাজার কোটি টাকা অতিক্রম করবে।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গত আট মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে। অন্যদিকে এই স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান সূচক ডিএসইএক্সও আট মাসের মধ্যে সবচেয়ে উপরে উঠে এসেছে। বুধবারের লেনদেনে হাসি দেখা গেছে ব্রোকার, মার্চেন্ট ব্যাংকার ও বিনিয়োগকারীসহ পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট সবার মধ্যে।

সপ্তাহজুড়ে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন বেড়েছে ১ হাজার ৬৩৪ কোটি টাকা। অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বেড়েছে ১ হাজার ৮৭৪ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে দুই স্টক এক্সচেঞ্জে বাজার মূলধন বেড়েছে ৩ হাজার ৫০৯ কোটি টাকা। ডিএসই ও সিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গেলো সপ্তাহে প্রথম কার্যদিবস রোববারে লেনদেনের শুরুতে ডিএসইর বাজার মূলধন ছিল ৩ লাখ ৩২ হাজার ৫১৩ কোটি টাকা এবং শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবারে (১ ডিসেম্বর) লেনদেন শেষে বাজার মূলধন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৩৪ হাজার ১৪৮ কোটি টাকায়। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন বেড়েছে ১ হাজার ৬৩৪ কোটি টাকা বা দশমিক ৪৯ শতাংশ।

এদিকে ডিএসইতে গত সপ্তাহে লেনদেন হয়েছে ৩ হাজার ৬০০ কোটি ৫০ লাখ টাকা; যা এর আগের সপ্তাহের চেয়ে ৮৮৭ কোটি বা ৯ দশমিক ৪৭ শতাংশ কম। আগের সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেন হয়েছিল ৩ হাজার ৯৭৭ কোটি ১৬ লাখ টাকা।

উল্লেখ্য, আগের সপ্তাহে ব্লক মার্কেটে তালিকাভুক্ত খুলনা পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড (কেপিসিএল) উদ্যোক্তা পরিচালকদের ৮২৮ কোটি ৫৫ লাখ শেয়ার লেনদেন হয়েছিল। যার ফলে পাঁচ বছরের সর্বোচ্চ লেনদেনের রেকর্ড হয় ডিএসইতে।

গত সপ্তাহে ডিএসইতে গড়ে প্রতিদিন লেনদেন হয়েছে ৭২০ কোটি ১০ লাখ টাকা; যা তার আগের সপ্তাহের চেয়ে ৯ দশমিক ৪৭ শতাংশ কম। আগের সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেন হয়েছিল ৭৯৫ কোটি ৪৩ লাখ টাকা।

গত সপ্তাহে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের সপ্তাহের চেয়ে ৩১ পয়েন্ট বেড়ে চার হাজার ৮২৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে।  শরিয়া সূচক ডিএসইএস ১৬ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ১৪৯ পয়েন্ট এবং ডিএস৩০ সূচক ১৮ পয়েন্টে বেড়ে ১ হাজার ৭৮৭ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে তালিকাভুক্ত মোট ৩৩০টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১৮৭টির, কমেছে ১০৭টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৪টি কোম্পানির শেয়ারদর। এছাড়া লেনদেন হয়নি দুটি কোম্পানির শেয়ার।

সপ্তাহের ব্যবধানে সার্বিক মূল্য আয় অনুপাত (পিই রেশিও) ১ দশমিক ৯৫ শতাংশ কমে ১৪ দশমিক ৫৯ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

এদিকে গত সপ্তাহে দেশের অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সিএএসপিআই সূচক বেড়েছে দশমিক ৭৮ শতাংশ। সিএসই৩০ সূচক বেড়েছে দশমিক ৩০ শতাংশ, সার্বিক সূচক সিএসসিএক্স বেড়েছে দশমিক ৬৮ শতাংশ, সিএসই৫০ সূচক বেড়েছে দশমিক ১৬ শতাংশ এবং সিএসআই সূচক বেড়েছে ১ দশমিক ২৯ শতাংশ।

সিএসইতে গড়ে মোট লেনদেন হয়েছে ২৮৫টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১৭৬টির, কমেছে ৯২টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৭টির। গত সপ্তাহে সিএসইতে টাকার অঙ্কে মোট লেনদেন হয়েছে ২২১ কোটি ৩২ লাখ টাকা।