BANK LAGOশহিদুল ইসলাম, শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা:

পুঁজিবাজারে দীর্ঘদিন পর ব্যাংক খাতের শেয়ারে সুবাতাস বইতে শুরু করছেন। দীর্ঘদিন পর ব্যাংক খাতের শেয়ারে দর বাড়ায় কিছুটা হলেও স্বস্তিতে রয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। তাছাড়া শেষ কার্যদিবসে বাজারে ব্যাংক খাতের শেয়ারের একক আধিপত্য বিস্তার ছিল।  তেমনি ব্যাংকিং খাতের প্রতি আস্থা ফিরতে শুরু করেছে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের।

দীর্ঘদিন ব্যাংক খাতের শেয়ারের প্রতি যারা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন তারা নতুন করে ব্যাংক খাতের শেয়ারের দিকে ঝুঁকছেন। এছাড়া দীর্ঘদিন পর বাড়ছে ব্যাংকিং খাতের শেয়ার দর। সাধারনত তিন কারনে ব্যাংক খাতের শেয়ারের প্রতি ঝোঁক বাড়ছে বিনিয়োগকারীদের। সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস পুঁজিবাজার বিশ্লেষকরা এমনই মনোভাব ব্যক্ত করেছেন দৈনিক দেশ প্রতিক্ষণ ও শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকমের কাছে। তারা বলেন, ঊর্ধ্বমুখী শেয়ারবাজারের গতি ত্বরান্বিত করতে ব্যাংকের শেয়ারের প্রতি কদর বাড়ছে। সামনে আরো বাড়বে।

কারণ অধিকাংশ বিনিয়োগকারীর কাছে ব্যাংকিং খাতের শেয়ারের প্রতি রয়েছে ব্যাপক আস্থা। যদিও শেয়ারবাজারের মন্দা সময়ে এ খাতের প্রতি আস্থা কম ছিল। কিন্তু বর্তমানে আবার এ খাতের শেয়ারের প্রতি ঝুঁকছেন বিনিয়োগকারীরা।

বাজার বিশ্লেষকরা জানান, পুঁজিবাজারে দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতার জন্য ব্যাংকিং খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। কারণ শেয়ারবাজার উন্নয়নের স্বাভাবিক গতি বাড়াতে ব্যাংকিং খাতের শেয়ারে বিনিয়োগের বিকল্প নেই। এ খাতের শেয়ার এখনো কিছুটা বিনিয়োগ ঝুঁকিমুক্ত। পাশাপাশি রয়েছে বিনিয়োগে সর্বোচ্চ আস্থাভাজন। তাই শেয়ারবাজারের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে ব্যাংকিং খাতের শেয়ারের গুরুত্ব অপরিসীম। তারা আরো জানান, ব্যাংকিং খাতের কোম্পানিগুলোর পরিশোধিত মূলধন এবং শেয়ার সংখ্যা বেশি।

যে কারণে বিনিয়োগকারীরা সাধারণত এ খাতকে বিনিয়োগ প্রাধান্য দিয়ে থাকেন। আবার কোম্পানিগুলোর লেনদেন ও দর ওঠানামা অনেকটাই স্থিতিশীলতা বজায় থাকে। অন্যান্য কোম্পানির মতো ঢালাওভাবে এ খাতের শেয়ার দর উত্থান-পতন হয় না। কয়েক বছর ব্যবসায়িক মন্দার কারণে বেশি মুনাফা দিতে পারেনি এ খাতের কোম্পানিগুলো। তারপরও অন্যান্য খাতের চেয়ে ভালো ডিভিডেন্ড দিয়েছিল। শেয়ারবাজারের পতনের সময় বিনিয়োগকারীরা এ খাত থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলেন।

ফলে এ খাতে বাজার সেলপ্রেসার বেশি হয়েছিল। পাশাপাশি প্রফিট টেক করেছে, যার প্রভাব পড়েছে পুরো খাতের ওপর। কিন্তু বর্তমানে শেয়ারবাজার ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে। এ ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে ব্যাংক খাতের শেয়ার ধারণ বা বিনিয়োগ করতে হবে। তাই এ খাতে বিনিয়োগ বাড়লে পুরনো লেনদেনের চমকে ফিরে আসবে বলে জানান তারা। এ প্রসঙ্গে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ব্যাংকের এক পরিচালক জানান, ব্যাংক খাতের শেয়ার সংখ্যা বেশি। শেয়ারবাজারে সব ব্যাংকের শেয়ার দর সামান্য বাড়লে পুরো বাজার ঊর্ধ্বমুখী থাকে।

আবার সামান্য কমলে এর উল্টো চিত্র দেখা যায়। তাই ব্যাংকের শেয়ার দর খুব বেশি উত্থান-পতন হয় না। বিগত কয়েক বছরে এ খাতে শেয়ার দর খুব একটা ঊর্ধ্বমুখী হয়নি। কারণ ব্যবসায়িক মন্দা ছিল।

সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) টপটেন গেইনারে উঠে এসেছে ব্যাংক খাতের ৩ কোম্পানি। এর মধ্যে শীর্ষে রয়েছে ব্যাংক এশিয়া লিমিটেড। সপ্তাহের ব্যবধানে কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়েছে ১৪ দশমিক ৩৭ শতাংশ। ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, আলোচ্য সপ্তাহে কোম্পানিটির প্রতিদিন গড়ে ১ কোটি ৩৩ লাখ ৮৪ হাজার ৬০০ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আর পুরো সপ্তাহে এই কোম্পানির ৬ কোটি ৬৯ লাখ ২৩ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।

তালিকার দ্বিতীয় স্থানে থাকা আইএফআইসি ব্যাংকের শেয়ার দর বেড়েছে ১৩ দশমিক ৮৭ শতাংশ। সমাপ্ত সপ্তাহে শেয়ারটির প্রতিদিন গড়ে ৬ কোটি ৮২ লাখ ৬৭ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। পুরো সপ্তাহে কোম্পানিটির ৩৪ কোটি ১৩ লাখ ৩৫ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।

তালিকার তৃতীয় স্থানে থাকা এবি ব্যাংকের দর ৮ দশমিক ৯২ শতাংশ বেড়েছে। সমাপ্ত সপ্তাহে শেয়ারটির প্রতিদিন গড়ে ২ কোটি ৭৯ লাখ ৫৭ হাজার ৬০০ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। পুরো সপ্তাহে কোম্পানিটির ১৩ কোটি ৯৭ লাখ ৮৮ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।