অবশেষে অর্থমন্ত্রী বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আশা জাগালেন
নানা জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটে অবশেষে অর্থমন্ত্রী পুঁজিবাজারকে স্থিতিশীল করতে সরকারের উন্নয়নের নীতিগত সহায়তা দিয়ে যাবেন বলে মন্তব্য করছেন। তবে এতে নতুন করে বিনিয়োগকারীদের মাঝে আশার আলো জাগতে শুরু করছে। ৩৩ লাখ বিনিয়োগকারীরা নতুন করে পুঁজিবাজার নিয়ে স্বপ্ন দেখছেন।
তবে বিনিয়োগকারীদের একটাই প্রশ্ন এ আশার আলো যেন ভেস্তে না যায়। কারন অতীতে সরকারসহ নিয়ন্ত্রক সংস্থা পুঁজিবাজার নিয়ে নানা আশার আলো দেখলো তা বাস্তবে রুপ নেই। বরং সরকারেরর নীতি নির্ধারকদের কথায় বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ করে বারবার সর্বশান্ত হয়েছেন। এবার যেন তা না ঘটে।
বিনিয়োগকারীদের একটাই দাবী এবার যেন বাজার একটি টেকসই ও স্থিতিশীল বাজারে রুপ নেয়। তাই প্রধানমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী, নিয়ন্ত্রক সংস্থার নিকট জোর দাবী যে কোন মুল্যে পুঁজিবাজারকে স্থিতিশীল করা।
গত রোববার অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে বলেছেন, পুঁজিবাজারের উন্নয়নের জন্য সরকার সব ধরনের সহায়তা দিয়ে যাবে। তবে সরকার বাজারে সরাসরি কোনো হস্তক্ষেপ করবে না। বাজার তার স্বাভাবিক নিয়মে চলবে। পুঁজিবাজারের উঠা-নামা স্বাভাবিক বিষয়। অর্থমন্ত্রী এই বক্তব্য যেন বাস্তবে রুপ নেয় এটাই ৩৩ লাখ বিনিয়োগকারীর দাবি।
এছাড়াও অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত দেশের পুঁজিবাজার নিয়ে বিষ্ময় প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, এখানে একটা অদ্ভুত ব্যাপার আছে। প্রাইমারি মার্কেটে ব্যাপক সাড়া পাওয়া যায় বিনিয়োগকারীদের। উদ্যোক্তারা বাজার থেকে যত টাকাই তুলতে চান না কেনো সমস্যা নেই। আইপিওতে কয়েকগুণ বেশি আবেদন পড়ে।
এ কারণে কোম্পানিগুলো বোনাসে (সম্ভবত প্রিমিয়াম বুঝাতে তিনি বোনাস উল্লেখ করেছেন) শেয়ার বিক্রি করে। কিন্তু আইপিও শেষে বাজারে আসলেই সেগুলোর বোনাস শেষ হয়ে যায়। দাম অনেক কমে যায়। অবশেষে অর্থমন্ত্রী যেন বিনিয়োগকারীদের সুখ দু:খ বোঝার চেষ্টা করছেন এজন্য আমি ব্যক্তিগত ভাবে অর্থমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই।
এছাড়া অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত সচিবালয়ের অর্থ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অর্থনৈতিক প্রতিবেদকদের সংগঠন ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের সঙ্গে প্রাক-বাজেট আলোচনায় তিনি শিগগিরই ফিন্যান্সিয়াল রিপোটিং কাউন্সিল (এফআরসি) গঠন করা হবে জানিয়েছেন। এর প্রতিক্রিয়ায় বিনিয়োগকারীরা জানিয়েছেন, এটি করা হলে অডিটরদের দৌড়াত্ব কমবে। এবং বাজারে স্বচ্ছতা ফিরে আসবে। এ ধরনের একটি বাজার দেখার জন্য বিনিয়োগকারীরা দীর্ঘদিন লড়াই করছে।
একাধিক বিনিয়োগকারীরা জানান, গত দুই বছরে পুঁজিবাজারে যেসব কোম্পানি তালিকাভুক্ত হয়েছে তার বেশিরভাগই দুর্বল প্রকৃতির। কারণ কোম্পানিগুলো বাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার সময় যে আর্থিক অবস্থার কথা প্রকাশ করে তালিকাভুক্ত হওয়ার পর সেটি আর থাকে না।
কিন্ত পুঁজিবাজারে এসব কোম্পানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার মতো কেউ নেই। ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং আইন (এফআরএ)-২০১৫ পাশ হওয়ার পর কাউন্সিল গঠনের বিষয়টি আটকে ছিল। অর্থমন্ত্রীর বক্তব্যের পর এটি দ্রুত বাস্তবায়ন করার দাবিও বিনিয়োগকারীদের।
এদিকে আজ বিনিয়োগকারীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমান পুঁজিবাজারকে একটি স্থায়ী স্থিতিশীল পর্যায়ে নেয়ার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করলেন নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এম খায়রুল হোসেন।
বিএসইসির চেয়ারম্যানের সঙ্গে পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী জাতীয় ঐক্য ফাউন্ডেশনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সাক্ষাতকালে বিনিয়োগকারীদের এ প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন তিনি। তার এই প্রতিশ্রুতি যেন বাস্তবে রুপ নেয় এটাই দাবী আমার।
আহসান আমীন
নির্বাহী সম্পাদক ও সিইও
দৈনিক দেশ প্রতিক্ষণ, শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম