১৫ দিনে বিও অ্যাকাউন্ট বাড়লো ৩ হাজার
আমীনুল ইসলাম, ঢাকা: পুঁজিবাজার স্থিতিশীলতায় সরকারের উদ্যোগের পাশাপাশি নিয়ন্ত্রক সংস্থার বিভিন্ন সিদ্ধান্তে নিলেও বাজার কিছুতেই স্থিতিশীলতার আভাস দিচ্ছে না। যার ফলে গত সপ্তাহে উঠানামার মধ্যে চলছে বাজার। তবে পুঁজিবাজার পুরোপুরি স্থিতিশীলতায় না ফিরলেও প্রতি কার্যদিবসেই বাড়ছে বেনিফিশিয়ারি ওনার্স একাউন্ট (বিও)।
আবারো পুঁজিবাজার মুখী হতে শুরু করেছে সাধারণ জনগণ। বিও অ্যাকাউন্ট খোলার প্রবণতা দেখে তা অনুমান করা যায়। সম্প্রতি প্রতিদিনই হাউজগুলোতে নতুন বিও খোলা হচ্ছে। মাত্র দুই সপ্তাহের ব্যবধানে পুঁজিবাজারে নতুন বিও খোলা হয়েছে ৩ হাজারের বেশি।
এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, গত ১৫ দিনে নতুন বিও খোলা হয়েছে ৩ হাজার ২টি। ১৫ দিন আগে বিও সংখ্যা ছিলো ৩২ লাখ ১ হাজার ২৬। এখন তা বেড়ে দাড়িয়েছে ৩২ লাখ ৪ হাজার ৩২৮টি। এই সময়ের মধ্যে নারী এবং কোম্পানির অ্যাকাউন্টও বৃদ্ধি পেয়েছে।
বাজার সংশ্লিষ্টদের মতে, গেল সপ্তাহে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) বাজার স্থিশীলতায় বেশকিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিএসইসির সিদ্ধান্তসমূহকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন বিনিয়োগকারীরা। যার প্রভাব পড়ছে বাজারে। ফলে বিও খোলার প্রবনতা বাড়ছে।
একাধিক সিকিউরিটিজ হাউজের কর্মকর্তারা বলেন, পুঁজিবাজার এখন কিছুটা স্থিতিশীল যে কারণে বিও খোলার প্রবণতা বাড়ছে। এর একটা উল্লেখযোগ্য কারণ হচ্ছে, মানি মার্কেটের নাজুক অবস্থা। সে কারণে মানি মার্কেট ছেড়ে সবাই পুঁজিবাজারের দিকে ধাপিত হচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আনোয়ার সিকিউরিটিজের সিইও মো আজম বলেন, এখন মানি মার্কেটের অবস্থা খুবই খারাপ। ব্যাংকে আমানতে সুদের হার অনেক কম। সে কারণে জনগণ মানি মার্কেট ছেড়ে পুঁজিবাজারে আসছে। সেই বাজারেও শুভ লক্ষণের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। সব মিলে বাজারমুখী হচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
একই প্রসঙ্গে সিনথিয়া সিকিউরিটিজের কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, আগের চেয়ে আমাদের হাউজে এখন নতুন বিও খোলার প্রবণতা বাড়ছে। এর আর একটি উল্লেখযোগ্য কারণ হচ্ছে পুঁজিবাজারে নতুন নতুন কোম্পানি তালিকাভূক্ত হচ্ছে।
এসব কোম্পানির আইপিওতে আবেদন করার জন্য ওপেন হচ্ছে নতুন অ্যাকাউন্ট। তাছাড়া সেকেন্ডারি মার্কেটের অবস্থাও এখন খারাপ নয়। সবমিলে পুঁজিবাজারে একটি অনুকূল পরিবেশ চলছে। যার প্রভাব পড়ছে বিও অ্যাকাউন্টসহ সকল ক্ষেত্রে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আবু আহমেদ শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকমকে বলেন, ব্যাংকগুলোর আমানতে বিপরীতের সুদের হার কমেছে। যার কারণে সেখান থেকে রিটার্ন কমে যাচ্ছে। আর পুঁজিবাজারও আগের তুলনায় স্থিতিশীল আচরণ করছে। এর ফলে বাজারে বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণও বাড়তে শুরু করেছে। আগামীতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকলে বাজারে আরও নতুন বিনিয়োগকারী আসবে বলে তিনি মনে করেন।