শেয়ার বার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) স্টেক-হোল্ডার অ্যালায়েন্স সিকিউরিটিজ এন্ড ম্যানেজমেন্টের শেয়ারধারী পরিচালক এবং দায়িত্বরত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাধব চন্দ্র দাশ এবং পার্থ প্রতিম দাশের বিরুদ্ধে নিজ হাউজে মার্জিন ঋণ নিয়ে সীমাহীন দুর্ণিতীর তথ্য উঠে এসেছে। সম্প্রতি দুর্নীতি দমন কমিশিন (দুদক) মাধব চন্দ্র দাশের বিরুদ্ধে প্রায় ৫কোটি টাকা পাচারের অভিযোগ তদন্ত শুরু করার পর এমন চাঞ্চল্যকর তথ্যের সন্ধান পাওয়া গেছে।

অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, অ্যালায়েন্স সিকিউরিটিজ থেকে নামে বেনামে নিজের আত্মীয় স্বজন এবঙ নিজের অ্যাকাউন্টে প্রায় ১০ কোটি ৩৬ লাখ ৬৬ হাজার ৮৪ টাকার মার্জিন ঋণ নিয়েছে। এর মধ্যে মাধব চন্দ্র দাশ এবঙ তার আত্মীয়দের অ্যাকাউন্টে ৪ কোটি ৪৮ লাখ ৭৬ হাজার ৬১৫ টাকা। অপরদিকে, পার্থ প্রতীম

দাশের আত্মীয় গৌতম মণী দাশের অ্যাকাউন্টে ইক্যুইটি ৫ কোটি ৬ লাখ ৪৭ হাজার ৭৯৩ টাকা ঋণাত্নক অবস্থায় রয়েছে। অথচ এ অ্যকাউন্ট থেকেও তিন কোটি ৬০ লাখ ৯৮ হাজার ৮৫৭ টাকা উত্তোলন করে নেয়া হয়েছে।

জানা যায়, অ্যালায়েন্স সিকিউুরিটিজের পরিচারক মাধব চন্দ্র দাশ এবং তার পাচ আত্মীয়র নামে প্রায় এক কোটি ৬৬ লাখ ৪১ হাজার ৪৯৫ টাকা ইক্যুইটি ঋনাত্নক অবস্থায় রয়েছে এর পুরোটাই শোধযোগ্য ঋণ। অন্যদিকে, এর মধ্যে দিলিপ কুমার সাহা, সম্পদের মূল্য ( নেট অ্যাসেট ভ্যালু) শুণ্য। অর্থ্যাৎ এ অ্যাকাউন্টগুলোতে এখন কোন শেয়ার নেই। বরং সঞ্চকয় কুমার সাহার অ্যাকাউন্ট থেকে ১৭ হাজার ৬০০ টাকা, লোকনাথ সিংহ রায়ের অ্যাকাউন্ট থেকে সাত লাখ ৯৩ হাজার টাকা, লক্ষণ কুমার সাহা এবং শিপ্রা রাণী সাহার যৌথ অ্যাকাউন্ট থেকে ২২ টাকা উত্তোলন করে নেয়া হয়েছে।

এদিকে পরিচালক মাধব চন্দ্র দাশের নিজের অ্যাকাউন্টের ডেবিট লায়াবিলিটি ৮৬ লাখ ১৩ হাজার ৬২০ টাকা। অথর্ঞাৎ নিজ অ্যাকাউন্টেই প্রায় ৮৭ লাখ টাকা দেনায় আছেন এ পরিচালক। বিপুল পরিমানের এ অর্থ দেণা থাকা সত্ত্বেও নিজের এ অ্যাকাউন্ট থেকে মাধব চন্দ্র রায় প্রায় ৪ কোটি ৬৩ লাখ ৭৪ হাজার টাকা

উত্তোলন করে নিয়েছেন। উত্তোলিত এ অর্থই হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে পাচার করা হয়েছে বলে অভিযোগ তদন্ত করছে দুদক। ইক্যুইটির বিপরীতে তার নেয়া ঋণের অনুপাত ২১৭.৭৯। এ স্তিতিগুলো চলতি বছরের ১৬ ফেব্রু পর্যন্ত নেওয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি নারায়ন চন্দ্র দাশ, লক্ষন কুমার সাহা, লোকনাথ সিংহ রায়, সঞ্জয় কুমার সাহার বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের অভিযোগ তদন্তাধীন রয়েছে।

এ বিষয়ে অ্যালায়েন্স সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাধব চন্দ্র দাশের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোন মন্তব্য করেননি। মার্জিন ঋণের মাধ্যমে শেয়ার লেনদেন করে সেই অর্থই পাচারের অভিযোগ উঠেছে।  সিকিউরিটিজ হাউজের এ পরিচালকের বিরুদ্ধে। এদিকে, নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জকমিশনের (বিএসইসি) একটি নির্দেশনা অনুযায়ী, কোন সিকিউরিটিজ হাউজের পরিচালক স্বীয় প্রতিষ্ঠান থেকে কোন মার্জিন ঋণ নিতে পারবেন না।

এ প্রসংগে বিএসইসির মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মোঃ সাইফুর রহমান বলেন, কোন সিকিউরিটিজ হাউজের শেয়ারহোল্ডার পরিচালক নিজের প্রতিষ্ঠান থেকে কোন মার্জিন নিতে পারেন না। এটা অবৈধ। এ আইন অমান্য করার কোন তথ্য বিএসইসি পেলে সাথে সাথেই তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হইবে। কোন পরিচালক নিজের ক্ষমতা খাটিয়ে তার আত্মীয় স্বজনকে ঋণ দিতে পারেন কিনা এ প্রসংগে তিনি বলেন, কোন পরিচালক নিজ প্রভাব খাটিয়ে এমন কিছু করতে পারেন না।

তবে যথাযথ প্রকৃয়ায় ক্লায়েন্ট হিসাবে অন্য যে কেউ ঋণ নিতে পারেন। বিএসইসির এ বক্তব্যের বিপরীতে দেখা যায়, মাধব চন্দ্র দাশের যে সব আত্বীয় স্বজনের যে পরিমান মার্জিন ঋণ দেওয়া হইয়াছে, সে পরিমান ঋন পাওয়ার যোগ্যতা তাদের নেই। অর্থাৎ প্রভাব খাটিয়ে এসব ঋণ দেওয়া হয়েছে। এরপর অভিযোগ উঠছে সে সব অ্যাকাউন্ট থেকে উত্তোলিত অর্থই হুন্ডির মাধ্যমে পাচার করা হয়েছে।