বিশেষ প্রতিবেদক : পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত প্রকৌশলী খাতের কোম্পানি আনোয়ার গ্যালভানাইজিংয়ের আর্থিক প্রতিবেদনের নিয়ম ভঙ্গ করে ২৯ লাখ টাকার অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। কোন নিয়মকে তোয়াক্কা করছে না কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ। একের পর এক অনিয়ম করে যাচ্ছেন।

অভিযোগ উঠেছে, আনোয়ার গ্যালভানাইজিং অবৈধভাবে স্বল্প মেয়াদী বিনিয়োগ দেখিয়ে এবং কমপ্রিহেনসিভ (ব্যাপক) আয় দেখানোর ক্ষেত্রে নিয়ম ভেঙ্গেছে বলে অভিযোগ করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। অন্যদিকে কোম্পানির দাবি, কোম্পানি এবং সিকিউরিজ আইন অনুযায়ী বিএসইসি না বুঝেই প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে কারণ দর্শানো নোটিশ জারি করেছে।

এক্ষেত্রে কোম্পানি ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং স্ট্যান্ডার্ডের (আইএফআরএস) বিধি অমান্য করার যে অভিযোগ উঠেছে,সেই আইন এদেশে এখনো বলবৎ হয়নি। আগামী ২০১৮ সাল থেকে এ আইন অনুযায়ী আর্থিক প্রতিবেদন তৈরীর নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কোম্পানি যে ক্রয় ম্ল্যূ ছিল সেই মূল্য উল্লেখ করেছে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ অ্যাকাউন্টিং স্ট্যান্ডার্ড (বিএএস) অনুযায়ী আন-রিয়েলাইজড মুনাফা হিসেবে আনা হয়নি। বিএএস অনুযায়ী মুনাফা রিয়েলাইজড বা গ্রহণ না করা পর্যন্ত কোম্পানি তা আর্থিক প্রতিবেদনে মুনাফা হিসেবে দেখাতে পারবে না। আর কোম্পানির বক্তব্য অনুযায়ী, এসব ঘটনাকেই অনিয়ম হিসেবে চিহ্নিত করে কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করেছে বিএসইসি।

সাত দিনের মধ্যে এ ব্যাপারে কারণ দর্শানোর জন্য কোম্পানিকে নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। এর বিপরীতে কোম্পানি তাদের অবস্থান উল্লেখ করে জবাব দিয়েছে। আর একই সাথে এমন ঘটনাকে বিএসইসি’র দূর্বলতা হিসেবে দেখছে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ।

বিএসইসি’র অনুসন্ধানে উঠে আসে, ২০১৪ সালের বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদনের ৭নং নোটে কোম্পানি ২৯ লাখ ১৯ হাজার ৭২৬ টাকা ক্রয় মূল্য অনুযায়ী সল্প-মেয়াদী বিনিয়োগ হিসেবে দেখান হয়েছে। যা বাংলাদেশ অ্যাকাউন্টিং স্ট্যান্ডার্ডের (বিএএস) ৩৯ নং ধারার পরিপন্থি।

আবার একই সাথে ওই বছরের আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে কোম্পানি কমপ্রিহেনসিভ আয়ের ক্ষেত্রে মুনাফা বা লোকসান কোনোটিই উল্লেখ করা হয়নি। এটিও বিএএসের একই ধারা ভঙ্গ করেছে। ফলে এসব অনিয়মের ওপর ভিত্তি করে বিএসইসি একই সাথে কোম্পানি এবং কোম্পানির অডিটর ম্যাবস্ অ্যান্ড জে পার্টনারসের বিরুদ্ধে কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করে।

এ ব্যাপারে আনোয়ার গ্যালভানাইজিংয়ের কোম্পানি সচিব তৌহিদুল ইসলাম বলেন,‘বিএসইসি ২৯ লাখ টাকার অনিয়মের বিষয়ে আমদের কাছে কারণ জানতে চেয়েছে। সে ব্যাপারে আমরা আমাদের অবস্থান উল্লেখ করে জবাব দিয়েছি। বিএএস এবং কোম্পানি আইন অনুযায়ী আমাদের আর্থিক প্রতিবেদনে কোনো ধরনের অনিয়ম করা হয়নি বলে তিনি দাবি করেন।