ব্যাংক ও আর্থিক খাতের ১৩ কোম্পানি বন্ধ হলে শেয়ারহোল্ডাররা কী পাবেন
শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: দেশের ইসলামি ধারার দুর্বল পাঁচ ব্যাংক একীভূত করে শরিয়াহভিত্তিক একটি ব্যাংক গঠিত হচ্ছে। ব্যাংকগুলোর আমানতকারীদের প্রাপ্য কোন নিয়মে পাবে তার একটি পরিকল্পনা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে এসব ব্যাংক যেহেতু দেশের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত সেহেতু এখানে সাধারণ বিনিয়োগকারীর সংখ্যাও কম নয়। এমতাবস্থায় বিনিয়োগকারীদের শেয়ার বা টাকা পাওয়ার বিষয়ে রয়েছে ধোঁয়াশা। ফলে শঙ্কায় এসব ব্যাংকের শেয়ারহোল্ডাররা।
সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক নয়টি দুর্বল ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পাশাপাশি নানান সমস্যায় জর্জরিত পাঁচটি ইসলামি ব্যাংক একীভূত করে নতুন একটি ব্যাংক চালুর অনুমোদন দিয়েছে। সরকারের এসব সিদ্ধান্ত আর্থিক খাতের জন্য বড় একটি সংস্কারমূলক উদ্যোগ।
দেশের আর্থিক খাত দীর্ঘদিন ধরে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির বেড়াজালে আটকে আছে। তাই সরকারের উদ্যোগ এই খাতে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে সহায়ক হবে বলে মনে করছেন খাত সংশ্লিষ্টরা। তবে প্রশ্ন উঠেছে ছোট ছোট বিনিয়োগকারী বা শেয়ারহোল্ডারদের ভাগ্য নিয়ে। তারা বছরের পর বছর ধরে এসব প্রতিষ্ঠানের শেয়ার কিনেছেন, বিনিয়োগ করেছেন। তাই বাংলাদেশ ব্যাংকের উদ্দেশ্য ইতিবাচক হলেও শেয়ারহোল্ডারদের অর্থের ভবিষ্যৎ কী? তা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
এখানে উল্লেখ্য, এই ১৪টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৩টি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত। সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে এসব প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৫৫০ কোটি শেয়ার আছে, যার মূল্য প্রায় ৫ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। ফলে এসব প্রতিষ্ঠান বন্ধের সিদ্ধান্তে শেয়ারহোল্ডাররা এখন আশঙ্কার মধ্যে আছেন। কারণ তাদের শেয়ারগুলো কার্যত মূল্যহীন হয়ে পড়েছে।
এদিকে বন্ধ হতে যাওয়া আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো মারাত্মক আর্থিক সংকটে আছে।
এর পেছনে আছে বেশ কয়েকটি কারণ। যেমন বিতরণ করা ঋণের বেশিরভাগ আদায় করতে পারেনি, মূলধন ঘাটতিতে পড়া, ধারাবাহিকভাবে দায় বৃদ্ধি। এছাড়া নানান আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতি ছিল এগুলো নিয়মিত চিত্র। এই পরিস্থিতিতে প্রতিষ্ঠানগুলোর সম্পদ বিক্রির মাধ্যমে বন্ধ করা হলেও শেয়ারহোল্ডারদের পুঁজির টাকা ফেরত পাওয়ার সম্ভাবনা কম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) তথ্যানুযায়ী, ৩১ আগস্ট পর্যন্ত গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের ৫৩ দশমিক ১১ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর শেয়ার রয়েছে। সাধারণ বিনিয়োগকারীর ৩১ দশমিক ৪৬ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের ২৮ দশমিক ৬২ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক শেয়ার, ৬৫ দশমিক ৪ শতাংশ পাবলিক শেয়ার এবং শূন্য দশমিক ৪৪ শতাংশ বিদেশি শেয়ার রয়েছে।
এক্সিম ব্যাংকের প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর কাছে ২৭ দশমিক ৬৫ শতাংশ, জনসাধারণের ৩৯ দশমিক ২৮ শতাংশ এবং বিদেশিদের শূন্য দশমিক ৬৩ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের (এসআইবিএল) সর্বোচ্চ প্রাতিষ্ঠানিক শেয়ার রয়েছে ৬৯ দশমিক ৫৯ শতাংশ, যেখানে সাধারণ বিনিয়োগকারীর ১৭ দশমিক ৯২ শতাংশ এবং বিদেশি বিনিয়োগকারীদের শূন্য দশমিক ৮৭ শতাংশ। ইউনিয়ন ব্যাংকের শেয়ার রয়েছে ১৪ দশমিক ৫৭ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক, ৩০ দশমিক ৯৩ শতাংশ পাবলিক এবং শূন্য দশমিক শূন্য ১ শতাংশ বিদেশি।

