শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূচকের বড় পতনে লেনদেন শেষ হয়েছে। তবে চলতি জুন মাসের শুরু থেকে উত্থানে ছিল পুঁজিবাজারে। এই সময়ের মধ্যে ৯ কার্যদিবস লেনদেনে ছয় কার্যদিবস বেড়েছে সূচক। আর বাকি তিন কার্যদিবস সূচক কমেছে। এর আগের মাসে ধারাবাহিক পতনের পর সূচক যখন বেড়েছে তখন সিংহভাগ কোম্পানির শেয়ার দর উত্থানে ফিরে।

পতনের বৃত্তে আটকে থাকা সূচক চলতি মাসে উত্থান ফিরলে বেশকিছু কোম্পানির শেয়ারের দর বাড়তে থাকে। সেখান থেকে মুনাফা নেওয়ার চাপে সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে পুঁজিবাজারে পতন হলেও সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে আবারও ঘুরে দাঁড়িয়েছে। তবে শেষ কার্যদিবসে প্রফিট টেকিংয়ের চাপে সূচকের পতন হয়েছে বলে মনে করছেন বাজার বিশ্লেষকরা।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চলতি মাসে যে সূচকের পতন হয়েছে সেগুলো ছিল মূলত মূল্য সংশোধন। কয়েকদিন টানা সূচকের উত্থানে শেয়ারের দর বাড়ায় বিনিয়োগকারীরা লাভে থাকা শেয়ার বিক্রি করতে আগ্রহী হয়। ফলে শেয়ার বিক্রির চাপে সূচকের পতন হয়েছে।

প্রস্তাবিত ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে পুঁজিবাজারের জন্য বেশি কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে নতুন কোম্পানির তালিকাভুক্ত করার উদ্দেশ্যে যেসব কোম্পানি এখনো পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়নি সেসব কোম্পানির করপোরেট কর বাড়ানো হয়েছে এবং যেসব কোম্পানির পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত সেসব কোম্পানির করপোরেট কর হার কমানো হয়েছে। চলতি অর্থবছরে এমন করের পার্থক্য ছিল আড়াই শতাংশ। এখন সেটি ৫ শতাংশ করা হয়েছে।

বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, করপোরেট করের পার্থক্য বাড়ানোর ফলে ভালো কোম্পানির এখন পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হতে আগ্রহী হবে। পাশাপাশি প্রস্তাবিত বাজেটে আরও ভালো যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে তার মধ্যে আছে, তালিকাভুক্ত সরকারি কোম্পানিগুলোতে সরকারি যে শেয়ার আছে সেগুলোর সিংহভাগ পুঁজিবাজারে ছেড়ে দেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করা। এমন সব উদ্যোগের ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে পুঁজিবাজারে। ফলে বিনিয়োগকারীরা এখন আগের তুলনায় অনেক আস্থাশীল। এই সময়ে যে সূচকের পতন হচ্ছে, সেগুলোকে মূল্য সংশোধন বলা যেতে পারে।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার দর ও টাকার পরিমানে লেনদেন। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। দিনশেষে ডিএসই ব্রড ইনডেক্স আগের দিনের চেয়ে ২২ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৪ হাজার ৭৫৪ পয়েন্টে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৪ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১ হাজার ৩৭ পয়েন্টে এবং ডিএসই ৩০ সূচক ৫ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১ হাজার ৭৮২ পয়েন্টে।

দিনভর লেনদেন হওয়া ৩৯৮ কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৭১ টির, দর কমেছে ২৫৮ টির এবং দর অপরিবর্তিত রয়েছে ৬৯ টির। ডিএসইতে ৩০৫ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। যা আগের কার্যদিবস থেকে ২২ কোটি ৮৩ লাখ টাকা কম। এর আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৩২৭ কোটি ৮৩ লাখ টাকার ।

অপরদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজার ২৭০ পয়েন্টে। সিএসইতে ২১০ টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব কোম্পানির মধ্যে ৮০ টির দর বেড়েছে, কমেছে ১০০ টির এবং ৩০ টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। সিএসইতে ১১ কোটি ২৩ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।