শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: টানা ছয় কার্যদিবস দরপতনের পর সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূচকের কিছুটা উত্থানে লেনদেন শেষ হয়েছে। তবে সূচকের উত্থান হলেও লেনদেনে আগের কার্যদিবস থেকে কিছুটা কমেছে। মুলত শেয়ার বিক্রির চাপে ঘুরে দাঁড়াতে পারছে না পুঁজিবাজার। এছাড়া বাজারের প্রতি আস্থা সংকট থাকায় প্রাতিষ্ঠানিক ও ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা হাত ঘুটিয়ে বসে আছেন।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে লেনদেনের শুরুতে ডিএসইর প্রধান সূচক ২৭ পয়েন্ট কমে যায়। তবে বেলা ১২টার পর বাজার ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে এবং সাড়ে ১২টার দিকে সূচক ৪৭ পয়েন্ট বেড়ে যায়। এই সময়টাতে বিশেষ করে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) সক্রিয়তা বাজারে বড় উত্থানের সম্ভাবনা জাগিয়ে তোলে।

তবে শেষ বেলায় আইসিবির বাই প্রেসার কিছুটা কমে গেলে বাজারে কিছুটা মন্দাবস্থা দেখা যায়। এছাড়া, বিনিয়োগকারীদের মধ্যে লাভ তোলার প্রবণতা দেখা দিলে বাজারে সেল প্রেসার বেড়ে যায়। ফলে দিন শেষে ডিএসইর সূচক ২২.৫১ পয়েন্ট সূচকের উত্থানে লেনদেন শেষ হয়েছে।

মুলত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে সূচকের কিছুটা উত্থানের পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে বিনিয়োগকারী সংগঠনগুলোর সঙ্গে সরকারের ঘনিষ্ঠ মহলের আলোচনাও। আজ প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরীর সঙ্গে বিনিয়োগকারী সংগঠনগুলোর প্রতিনিধিদের বৈঠক নির্ধারিত রয়েছে। বাজারের স্থিতিশীলতা ও বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরির বিষয়ে আলোচনার খবরে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে কিছুটা আস্থার সঞ্চার হয়।

বাজার সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, এই বৈঠকের প্রভাবও বাজার উত্থানে ইতিবাচক ভূমিকা রেখেছে। তবে আজকের বাজারের একটি ব্যতিক্রম দিক ছিল লেনদেনের পরিমাণ। বড় উত্থান প্রত্যাশার দিনেও ডিএসইতে লেনদেন আগের দিনের তুলনায় প্রায় ১৮ কোটি টাকা কমে গেছে। এদিন সূচক বাড়লেও কমেছে টাকার পরিমানে লেনদেন। তবে বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার দর। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

জানা গেছে, দিনশেষে ডিএসই ব্রড ইনডেক্স আগের দিনের চেয়ে ২২ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৪ হাজার ৬৩৭ পয়েন্টে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৩ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১ হাজার ১১ পয়েন্টে এবং ডিএসই ৩০ সূচক ২১ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১ হাজার ৭২৯ পয়েন্টে।

দিনভর লেনদেন হওয়া ৩৯৮ কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ২২২ টির, দর কমেছে ৯৯ টির এবং দর অপরিবর্তিত রয়েছে ৭৭ টির। ডিএসইতে ২৪৭ কোটি ৪২ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। যা আগের কার্যদিবস থেকে ১৭ কোটি ৫৬ লাখ টাকা কম। এর আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ২৬৪ কোটি ৯৮ লাখ টাকার ।

অপরদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ২৬ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজার ৫১ পয়েন্টে। সিএসইতে ১৮০ টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৭৬ টির দর বেড়েছে, কমেছে ৭৭ টির এবং ২৭ টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। সিএসইতে ৮ কোটি ৮ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।