শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম: পুঁজিবাজারে সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে সূচকের বড় উত্থানে লেনদেন শেষ হয়েছে। ১১ বছর পর পুঁজিবাজারে মাইফলক ছুঁতে যাচ্ছে প্রধান সূচক ডিএসইএক্স। ২০১০ সালের মহাধসের প্রতিক্রিয়ায় ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারি সাত হাজারের নিচে নেমে আসার পর সূচক কখনও এতটা উঁচুতে ওঠেনি। ২০১১ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি সূচকের অবস্থা এর চেয়ে বেশি ছিল।

সেদিন ডিএসইর প্রধান সূচক ছিল ৭ হাজার ১২৫ পয়েন্ট। বর্তমানে ডিএসইএক্স সূচক সে সময়ের ডিএসই সূচকের তুলনায় ২.৭৮ শতাংশ কম হয়। সেটি বিবেচনা করলে অবশ্য ডিএসই সূচক সবশেষ যখন সাত হাজার পয়েন্টের বেশি ছিল, তার চেয়ে উঁচুতে আজকের পুঁজিবাজার।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ-ডিএসইর সূচক এখন সাত হাজার ছুঁই ছুঁই। তিন কর্মদিবস পতনের পর টানা তিন কর্মদিবস বেড়ে সূচক এখন ৬ হাজার ৯৮১ পয়েন্ট। তিন দিনে ৫৯ পয়েন্ট কমা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হলেও পরের তিনি দিনে বাড়ল যথাক্রমে ৪৫, ৪৭ ও ৬৪ পয়েন্ট। লেনদেন শেষ হওয়ার কিছুক্ষণ আগে সূচক ৬ হাজার ৯৯১ পয়েন্টে উঠে গেলেও শেষ মুহূর্তের সমন্বয়ে তা কমে ১০ পয়েন্ট।

পর পর তিন দিন সূচকের সঙ্গে বেড়েছে লেনদেনও। টানা তিন দিন সূচক পতনের শেষ দিন সোমবার ১৬ কর্মদিবস পর লেনদেন দুই হাজার কোটি টাকার নিচে নেমে এসেছিল। এরপরের প্রতিদিনই লেনদেন আগের দিনকে ছাড়িয়ে গেছে।

দিনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সূচকের তেজিভাবের মধ্য দিয়ে দেশের পুঁজিবাজারে লেনদেন হয়েছে। এতে সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার (২ সেপ্টেম্বর) সূচকের পাশাপাশি লেনদেন ও অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে।

এদিন ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, প্রকৌশল, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি এবং ওষুধ ও রসায়ন খাতসহ বেশিরভাগ খাতের শেয়ারের দাম বেড়েছে। সেই ধাক্কায় দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচক বেড়েছে ৬৪ পয়েন্ট। এর আগের দিন বুধবার (১ সেপ্টেম্বর) বেড়েছিল ৪৭ পয়েন্ট। অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সূচক বেড়েছে ১৭২ পয়েন্ট।

ফলে তিন দরপতনের পর মঙ্গল, বুধ এবং বৃহস্পতিবার টানা তিনদিন পুঁজিবাজারে উত্থান হলো। তার আগে টানা তিন দিন (গত সপ্তাহের বুধ, বৃহস্পতি ও চলতি সপ্তাহের রোববার) দরপতন হয়েছিল। তবে পরবর্তীতে তিন দিনে ( মঙ্গল, বুধ ও বৃহস্পতিবার) ডিএসইর প্রধান সূচক ১৫৮ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ৯৮১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

অর্থাৎ ৭ হাজার পয়েন্ট ছুঁইছুঁই। লেনদেনও দেড় হাজার কোটি টাকার কোটা থেকে আড়াই হাজার কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে। এতে বিনিয়োগকারীদের বাজার মূলধন ৮ হাজার ৯৩৬ কোটি ৩ লাখ ৮২ হাজার টাকা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৬৩ হাজার ৭১৫ কোটি ৬৪ লাখ ২৩ হাজার টাকা। বুধবার ব্যাংক খাতের তালিকাভুক্ত ৩২টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছিল ২৩টির, কমে ৫টির, আর অপরিবর্তিত থাকে চারটির। আর্থিক খাতের ২৩টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছিল ১৬টির, কমে ২টির, আর অপরিবর্তিত ছিল ৫টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।

ডিএসইর তথ্য মতে, বৃহস্পতিবার (২ সেপ্টেম্বর) ডিএসইতে মোট ৩৭৩টি প্রতিষ্ঠানের ৬৩ কোটি ৬০ লাখ ৭২ হাজার ৯০৬টি শেয়ার হাত বদল হয়েছে। এর মধ্যে ২৩৭টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বেড়েছে, কমেছে ১০৫টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৩১টির। ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ৪৭৪ কোটি ৩ লাখ ৪ হাজার টাকা।

আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ২ হাজার ৩৬৬ কোটি ৩৬ লাখ ২৯ হাজার টাকা। অর্থাৎ আগের দিনের চেয়ে লেনদেন কিছুটা বেড়েছে। বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়ায় এ দিন ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ৬৪ দশমিক ৬৬ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ৯৮১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। প্রধান সূচকের পাশাপাশি ডিএসইর অন্য সূচকগুলোর মধ্যে শরিয়াহ সূচক ১৩ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৫০৮ পয়েন্টে এবং ডিএসই-৩০ সূচক ২২ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ৪৯৬ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

এ দিন ডিএসইতে লেনদেনের শীর্ষে ছিল বেক্সিমকো লিমিটেড। দ্বিতীয় স্থানে ছিল বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইনস্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড। এরপর সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকো ফার্মার শেয়ার। এরপর যথাক্রমে ছিল; জিপিএইচ ইস্পাত, লাফার্জ-হোলসিম, ব্রিটিশ অ্যামেরিকান টোব্যাকো, অ্যাক্টিভ ফাইন,পাওয়ার গ্রিড, আইএফআইসি ব্যাংক এবং এসএস স্টিল লিমিটেড।

এদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১৭২ পয়েন্ট বেড়ে ২০ হাজার ৩২৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। সিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩২৩টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৮৩টির শেয়ারের দাম বেড়েছে। কমেছে ১০৫টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৫টি কোম্পানির শেয়ারের দাম। এ বাজারে লেনদেন হয়েছে ৮৮ কোটি ৩০ লাখ ৯ হাজার ৯০ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৯৯ কোটি ৫২ লাখ ৯০ হাজার ৬৩ টাকা।

পুঁজিবাজারের সব খবর পড়তে ক্লিক করুন

ডিএসই-সিএসই’র সূচকে নতুন রেকর্ড, সূচক ৭ হাজার ছুঁইছুঁই

ডিএসই টপ ২০ তালিকায় নতুন ২ কোম্পানি

পুঁজিবাজারে ১৫ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ ২২ ব্যাংকের

বস্ত্র খাতের ২০ কোম্পানিতে বেড়েছে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ

পূরবী জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের মুনাফা কমছে ৭ পয়সা