স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বীমা খাতের কোম্পানি প্রগতি লাইফ ইন্সুরেন্সের শেয়ারদরে ব্যাপক উল্লম্ফন হয়েছে। তিন মাস আগে কোম্পানিটির শেয়ারদর ছিল ৮৭ টাকা। এখন তিন মাসের ব্যবধানে বেড়ে হয়েছিল ২৭৫ টাকা। মুলত কারসাজিকারকরা সংঘবদ্ধ হয়ে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম মাত্র ৩ মাসের মধ্যে অস্বাভাবিকভাবে ২৭৯ টাকায় নিয়ে যায়।

সাধারণ বিনিয়োগকারীদের প্রলোভিত করে মুনাফা হাতিয়ে নিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছে কারসাজিকারকরা। এরপর হয়ত কমতে শুরু করবে শেয়ারটির দাম। এভাবে বাজারকে অস্থিতিশীল করে একটি চক্র একের পর এক শেয়ার নিয়ে কারসাজি করছে।

এর আগে দুর্বল মৌল ভিত্তি শেয়ার জিকিউ বলপেন শেয়ার নিয়ে বড় কারসাজি হয়েছে। ১২০ টাকার জিকিউ বলপেন ৩ মাসের মধ্যে অস্বাভাবিকভাবে ৬০০ টাকায় লেনদেন হয় । এ ভাবে বাজারে চলছে হরিলুটের মত কারসাজি। তবে নিয়ন্ত্রক সংস্থার ব্যস্ত আগের সরকারের আমলে কারসাজি জরিমানা ইস্যুতে। তবে তার নাকের ডগার বড় ধরনের কারসাজি হচ্ছে। এ নিয়ে কী বিএসইসির মাথা ব্যথা নেই এ প্রশ্ন এখন বিনিয়োগকারীদের।

এগিতে শেয়ার বার্তা ২৪ ডটকমের প্রতিবেদনের পর প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্স পিএলসি শেয়ারদর অস্বাভাবিকভাবে বাড়ার কারণ জানতে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জকে (ডিএসই) কোম্পানিকে চিঠি দিয়েছে। তবে কোম্পানিটি জানিয়েছেন দরবৃদ্ধির কোন কারণ নেই। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র মতে, কোম্পানিটির শেয়ারদর অস্বাভাবিকভাবে বাড়ার কারণ জানতে চেয়ে সম্প্রতি নোটিশ পাঠিয়েছে ডিএসই। এর জবাবে কোম্পানিটি জানায় কোনো অপ্রকাশিত মূল্য সংবেদনশীল তথ্য ছাড়াই শেয়ার দর বাড়ছে। গত ১০ সেপ্টেম্বর কোম্পানিটির শেয়ারদর ছিলো ১৯৫ টাকা ২০ পয়সায়। ৭ অক্টোবর বাজার শেষে শেয়ারটির দর বেড়ে ২৬১ টাকা ৫০ পয়সায় দাড়িয়েছে। তবে দিনভর কোম্পানিটির শেয়ার দর ২৬০ থেকে ২৭৯ টাকায় উঠানামা করে।

এসময়ের মধ্যে শেয়ারটির দর বেড়েছে ৬৬ টাকা ৭০ পয়সা। এই দর বৃদ্ধিকে অস্বাভাবিক বলে মনে করছে ডিএসই।
ডিএসইর এক সদস্য বলেন, প্রগতি লাইফ ইন্সুরেন্সের মত শেয়ার ২৭৯ টাকা হওয়ার কথা নয়। এর পেছনে মুলত কারসাজির হচ্ছে। তাছাড়া বাজারে গুঞ্জন রয়েছে প্রগতি লাইফ ইন্সুরেন্সের কারসাজি সাথে একটি চক্র জড়িত রয়েছে। এছাড়া খোলা চোখেই বোঝা যায়, এই দাম বাড়ার পেছনে কোনো বিশেষ চক্র আছে। বিনিয়োগকারীদের কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।

তিনি আরও বলেন, অতীতে আমরা অনেক কোম্পানির শেয়ারের দাম অস্বাভাবিক হারে বাড়তে দেখেছি। এরপর সাধারণ বিনিয়োগকারীদের বড় ধরনের লোকসানের মধ্যেও পড়তে দেখেছি। কারণ অস্বাভাবিক দম বাড়ার পর অস্বাভাবিক দরপতনও হয়। কোন বিশেষ চক্র এই দাম বাড়ানোর পেছনে রয়েছে, নিয়ন্ত্রক সংস্থার উচিত তা ক্ষতিয়ে দেখে বের করা। যদি কেউ আইন লঙ্ঘন করে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে হবে।

ডিএসইর দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা বলেন, প্রগতি লাইফ ইন্সুরেন্সের শেয়ারের দাম অস্বাভাবিক হারে বাড়ার বিষয়টি নজরদারি করা হচ্ছে। ফলে দাম বাড়ার ইস্যুতে কোম্পানিকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। শেয়ারের দাম বাড়ার ক্ষেত্রে কোনো অসংগতি থাকলে সে অনুযায়ী প্রতিবেদন তৈরি করে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসিকে দেওয়া হবে।