dse-cse lagoফাতিমা জাহান, শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: সররকারসহ নীতি নির্ধারকের আন্তরিকতায় পুঁজিবাজার শক্তিশালী অবস্থানে পুঁজিবাজার ধীরে ধীরে স্থিতিশীলতার পথে হাঁটছে। সরকারসহ নীতি নির্ধারকদের আন্তরকিতার বাজার তার নিজস্ব গতিতে চলছে। ফলে একদিন পরই ফের উত্থানে ফিরেছে পুঁজিবাজার। বর্তমান পুঁজিবাজার স্থিতিশীলতার দিকে হাটতে শুরু করায় বাজারের প্রতি সাধারণ বিনিয়োগকারী থেকে শুরু করে সকলের আস্থা বেড়ে গেছে।

দীর্ঘ মন্দার পর অবশেষে দেশের শেয়ারবাজার স্থিতিশীলতার দিকে হাটতে শুরু করেছে। ঈদুল ফিতরের পর থেকে মূলত বাজার উঠানামার মধ্য দিয়ে এ স্থিতিশীলতার দিকে এগিয়ে চলছে। এ করণেই বাজারের প্রতি আস্থা বাড়ছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দীর্ঘ মন্দার পর বাজারে স্থিতিশীলতা ফিরে আসার কারণে সূচকের সঙ্গে বাড়ছে লেনদেনের পরিমাণ। মূলত প্রাতিষ্ঠানিক ও বড় পুঁজির বিনিয়োগকারীদের সক্রিয় অংশগ্রহণের ফলে বাজার স্থিতিশীলতার পথে হাটতে শুরু করেছে। এর সঙ্গে লোকসানে থাকা সাধারণ ও ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা তাদের লোকসান কাটিয়ে উঠতে নতুন করে তাদের বিনিয়োগে অংশগ্রহণ বাজারকে আরও স্থিতিশীলতার দিকে নিয়ে যাচ্ছে। এতে বাজারে প্রতি হারিয়ে যাওয়া আস্থা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আবার ফিরতে শুরু করে।

এ বিষয়ে আইসিবি ইনভেস্টমেন্টসহ কয়েকটি মার্চেন্ট ব্যাংকের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানান, আস্থা আর সন্তুষ্ট এক জিনিস নয়। আস্থা বলতে বাজারে বিনিয়োগ উপযোগী পরিবেশ রয়েছে এমন অবস্থায় বিনিয়োগে ফেরাকে আস্থা বলতে পারি। আর সন্তুষ্ট সম্পূর্ণ আলাদা বিষয়। তারা বলেন, ধসের কারণে কোন লোক যদি ২০ লাখ টাকা হারিয়ে ফেলেন।

সে এ টাকা বাজার থেকে তুলতে না পারা পর্যন্ত তিনি সন্তুষ্ট হতে পারে না। তারা আরো বলেন, অনেক বিনিয়োগকারী আছে যাদের ইক্যুইটি মাইনাসে রয়েছে। আবার লোকসানে থাকা বিনিয়োগকারীদের শেয়ার কষ্টিং প্রাইজে না আসা পর্যন্ত লেনদেনে অংশগ্রহণ করতে পারছে না।

এ সকল বিনিয়োগকারীরা তো সন্তুষ্টের কাছাকাছিও আসতে পারেনি। বরং তাদের এ মুহুর্তে বিনিয়োগে ফেরার প্রত্যাশায় অপেক্ষা করতে হচ্ছে। এদিকে টানা ১৩ কার্যদিবস যাবৎ উত্থানে থাকার পর রোববার বিনিয়োগকারীদের মধ্যে মুনাফা তুলে নেয়ার ঝোঁক ছিল।

ফলে গতকাল কিছুটা নিম্নমুখী ছিল সূচক। তবে এর প্রভাব সোমবার লেনদেনের শুরুতে থাকলেও শেষভাগে এসে টানা বাড়ে বাজার। সরকারসহ সকল মহলের ইতিবাচক প্রচেষ্টায় পুঁজিবাজার বর্তমানে ভালো অবস্থানে রয়েছে এবং এ ধারা আগামীতেও বিদ্যমান থাকবে বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।

যারা বিনিয়োগ করে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদের আর ক্ষতি হবে না বলে আশ্বাস দিয়েছেন জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। তিনি বলেছেন, মানুষের বিশ্বাসটাই হচ্ছে ব্র্যান্ড, এটাকে প্রতিষ্ঠা করেত হবে। অন্যেরা যা ব্র্যান্ড করছে, তাই আপনারা কিনছেন। কিন্তু নিজের যে ব্র্যান্ডটা আছে তা কারো কাছে তুলে ধরছেন না। এতে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন।

মানুষের আস্থার স্থলটাকে বৃদ্ধি এবং ব্র্যান্ডিং করার মাধ্যমে আপাদের ক্ষতি পুষিয়ে দেয়া হবে। পাশাপাশি দেশের বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়নের জন্য বড় বড় প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। ইতোমধ্যে কয়েকটি বিদেশি কোম্পানির সাথে চুক্তিও করা হয়েছে। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সরকার পুঁজিবাজার থেকেও অর্থ সংগ্রহ করতে আগ্রহী। প্রয়োজনে আগামী বাজেটে বিদ্যুৎ খাতের জন্য ৫-১০ হাজার কোটি টাকার কম বরাদ্দ রেখে শেয়ারবাজার থেকে টাকা সংগ্রহ করার কথাও জানিয়েছেন তিনি। যা পুঁজিবাজারের জন্য ইতিবাচক বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

যার সুবাদে সোমবার বাজার বেড়েছে বলেও জানিয়েছেন তারা। একাধিক মার্চেন্ট ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, বর্তমানে পুঁজিবাজার একটি সুন্দর অবস্থায় রয়েছে। বিনিয়োগকারীরা এখন বাজারে চোখ-কান খোলা রেখে বিনিয়োগ করতে পারে। তবে বর্তমানে ক্যাপিটাল মার্কেটের ভালো অবস্থার মধ্যে অসংখ্য নিচুমানের কোম্পানিও রয়েছে।

যারা যেকোন সময় সুযোগ নিতে পারে। তাই তাদের ব্যাপারে বিনিয়োগকারীদের সজাগ থাকতে হবে। যদিও ক্ষতিগ্রস্ত হতে হতে বিনিয়োগকারীরা এখন অনেক চালাক হয়েছে। অর্জন করেছে অভিজ্ঞতাও। আগের মতো বিনিয়োগকারীরা হুজুগে বিনিয়োগ করে না। দেখে-শুনে ও বুঝে বিনিয়োগ করে। ফলে আগের মতো এখন আর বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন না। এটা পুঁজিবাজারের জন্য অত্যন্ত ভালো দিক। তারা আরও বলেন, সরকার বিগত কয়েক মাসে ক্যাপিটাল মার্কেটের উন্নয়নে অনেক পদক্ষেপ নিয়েছে। যা বাস্তবায়নও হচ্ছে।

যে কারণে ক্যাপিটাল মার্কেট দিনকে দিন ভালোর দিকে যাচ্ছে। তবে মার্কেটকে আরও ভালো করতে হবে। এজন্য ওটিসি মার্কেট ও জেড’ ক্যাটাগরির শেয়ার ক্রয়-বিক্রয়ে কিছু নীতিমালার প্রয়োজন। কেননা ওটিসি মার্কেটে যেসব শেয়ার রয়েছে সেগুলোর ব্যাপারে মালিকপক্ষের যেন কোন দায়বদ্ধতা নেই। আর জেড’ ক্যাটাগরির শেয়ার বিক্রিতে ৮ কার্যদিবস সময় লাগার বিষয়টি বিনিয়োগকারীদের জন্য হতাশজনক। তাই এ ওয়াকিং ডে’র সময় কমানো গেলে বাজার আরও উন্নত হবে।