forbbbরাকিবুল হাসান, আসাদুজ্জামান মুরাদ , শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্তির অপেক্ষায় থাকা চামড়া খাতের কোম্পানি ফরচুন সুজের বিরুদ্ধে শ্রমিক নিপীড়ন ও মারধরের অভিযোগ উঠেছে। এছাড়াও অতিরিক্ত কর্মঘন্টা কাজ করানো হলেও বেতন বোনাস দেওয়া নিয়ে টালবাহানা করছে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ।

সরেজমিন অনুসন্ধানে দেখা যায়, বরিশাল নগরীর বিসিক এলাকার রফতানীমুখি জুতা নির্মানকারী প্রতিষ্ঠান ফরচুন সুজ লিমিটেডে প্রায় ১৫শত শ্রমিক কাজ করে। তবে এই প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে শ্রমিকদের বেতন-ভাতা নিয়ে তালবাহানা।

কর্মসময় ৮ ঘন্টার স্থলে ১০/১২ঘন্টা আটকে রেখে জোরপূর্বক কাজ করানো, বেতন ভাতা চাইলেই মারধরের অভিযোগ উঠেছে।  অভিযোগ রয়েছে, বরিশালের প্রভাবশালী ব্যক্তি হওয়ায় গায়ের জোরে প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করছে কোম্পানির চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান। আর বোনাসের দাবিতে কেউ কথা বললে গায়ে হাত তোলেন মিজানুর রহমানের ভাই শফিকুর রহমান।

জানা যায়, গত বছর ১৮ মে সহ প্রতিষ্ঠানিটির স্থাপিত হওয়ার ৫ বছরে এখন পর্যন্ত বেতন-ভাতার দাবিতে  ৫ থেকে ৬ বার শ্রমিকরা বিদ্রোহ করেছে। বিশেষ করে গেল বছর ৩৪ জন শ্রমিক অতিরিক্ত কাজের (ওভার টাইম) মজুরী দাবি করায় কারাখানা থেকে বের করে দেয়  কোম্পানি কৃর্তপক্ষ। এসময় বেশ কিছু শ্রমিককে মারধর করে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক শ্রমিক বলেন, ২০১৫ সালের ১৯ মে সোমবার বেলা ১২টায় বিক্ষুদ্ব ২০ থেকে ৩০ বছর বয়সী ১৫-২০ জন শ্রমিক প্রধান ফটকে অবস্থান করে এবং বিক্ষোভ করে। এসময়  ইলিয়াস নামক শ্রমিকসহ বেশ কয়েকজন শ্রমিককে মারধর করে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ।

অনুসন্ধানে দেখা যায়, ২০১৫ সালে কাটিং শাখার শ্রমিক ছিল ইলিয়াস। ইলিয়াসকে মারধর করেছে প্রতিষ্ঠানের মালিকের ভাই শফিকুর রহমান ।  এ ব্যাপারে শ্রমিক ইলিয়াস বলেন, মালিকের ভাই শফিকুর রহমান কোম্পানির প্রভাব খাটিয়ে প্রায় এই ধরনের ঘটনা ঘটায়। আমাকে নয় এরকম বহু শ্রমিকদের মারধর করে মালিকের ভাই। তাছাড়া প্রতিবাদ করলে চাকুরীচ্যুত করার ভয় দেখায়। পাশাপাশি চুরির মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়।

কারখানা থেকে বের করে দেবার কারন সর্ম্পকে ইলিয়াস অন্যান্য শ্রমিকরা জানান, গত ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারী মাস থেকে তাদের বেতন ও অতিরিক্ত কাজের মজুরী বকেয়া রয়েছে। প্রত্যেক শ্রমিকের গড়ে মাসে দেড়শ ঘন্টার (প্রতি ঘন্টায় সাড়ে ১৭ টাকা) অতিরিক্ত কাজের মজুরী বকেয়া রয়েছে।

বকেয়া পরিশোধের সময় তাদের মাসে ৩৬ ঘন্টার মজুরী দেয়া হয়। কিন্তু শ্রমিকরা ওই মজুরী নিতে অস্বীকার করায় তাদের কারখানা থেকে বের করে দেয়া হয়েছে। একাধিক শ্রমিকরা জানান, মালিকের ভাই শফিকুর রহমানের ইচ্ছায় পুরো প্রতিষ্ঠান চলে। তিনি প্রভাবখাটিয়ে শ্রমিকদের জিম্মী করে রাখছেন।

এ ব্যাপারে ফরচুন সুজ লিমিটেডের ডেপুটে ম্যানেজার মোঃ জাকির হোসেন জানান, চেয়ারম্যান বর্তমানে দেশের বাহিরে আছে তাই তিনি আর কিছু বলতে চাচ্ছেন না। তারা শ্রমিকদের মজুরি প্রতিমাসেই পরিশোধ করছে। এর আগে কিছু কর্মচারী অনর্থক বিক্ষোভ করেছে। এখন শ্রমিকদের সাথে তাদের কোন বিরোধ নেই। আর আগামী মাসে চেয়ারম্যান আসলে যোগাযোগ করতে বলেন। তিনি আর কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি। সুত্র: দৈনিক দেশ প্রতিক্ষণ, দেশ প্রতিক্ষণ ডটকম

চলবে ……………………